ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর আর কোনো হামলা না করলে তারা পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করতে রাজি। তিনি বলেন, ইরান সবসময় সংলাপের জন্য প্রস্তুত ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, কিন্তু আলোচনার পথ যেন যুদ্ধের দিকে না মোড় নেয়, নিশ্চিত করতে হবে। তিনি একসময় তেহরানে বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে এসব কথা জানান।
ইসরায়েলের সঙ্গে চলা ১২ দিনের সংঘর্ষ এবং ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রেক্ষিতে আরাগচি বলেন, সম্ভাব্য আলোচনায় ফিরে আসার আগে সকল পক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে যেন আর কোনো হামলা না হয়। এই হামলাগুলো ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে ধ্বংসপ্রাপ্ত করেছে এবং আলোচনার জটিলতা বাড়িয়েছে।
এসব ঘটনার পর ইরান জাতিসংঘ পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা (আইএইএ) এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে দিয়েছে, ফলে সংস্থার পরিদর্শকরা ইরান ছাড়তে বাধ্য হন। আরাগচি জানান, আইএইএ’র কোনও অনুরোধ এখন ‘ঘটনাভিত্তিক ও স্বার্থ বিবেচনায়’ মূল্যায়ন করা হবে এবং ভবিষ্যতে পরিদর্শনগুলো ইরানের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ এবং পরিদর্শকদের নিরাপত্তার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে।
তিনি সতর্ক করেন যে, যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকাগুলোতে অব্যবহৃত বিস্ফোরক এবং বিকিরণযুক্ত উপাদানের ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা সংকটে ফেলা হতে পারে।
আরাগচি আবারও জোর দেন যে ইরান নিজ ভূখণ্ডে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাবে, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার এই কর্মসূচিকে গ্রহণযোগ্য নয় দাবি করেছেন।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে ছিল বলে তাদের হামলা হয়েছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা ও আইএইএ’র তথ্য মতে, ইরান ২০০৩ সালের পর থেকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করছে না। তবে দেশটি ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা অস্ত্র-যোগ্য মাত্রা ৯০ শতাংশের কাছে রয়েছে।
এদিকে, গত সোমবার (৭ জুলাই) ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ফলে তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন এখনও করা সম্ভব হয়নি।