বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশের প্রতিটি উপজেলার ক্রিকেটারদের সম্পূর্ণ ডাটাবেজ তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে ব্যাটসম্যান থেকে শুরু করে বলার পর্যন্ত প্রতিটি খেলোয়াড়ের বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষিত থাকবে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই বরিশালের প্রতিটি ক্রিকেটার নিজ জেলার মাধ্যমে বরিশাল বিভাগকে প্রতিনিধিত্ব করুক। যখন সব জেলা একযোগে শক্তিশালী একটি বিভাগীয় দল গঠন করবে, তখন আর কাউকেই ঢাকায় গিয়ে খোঁজখবর করতে হবে না।
রোববার টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে বরিশাল জীবনানন্দ দাস স্টেডিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানানো হয়। অনুষ্ঠানটির উদ্বোধন করেন বিসিবি সভাপতি নিজেই। ইভেন্টে অনূর্ধ্ব ১২, বালক-বালিকা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, পেস হান্টার প্রতিযোগিতা এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রিকেটপ্রেমী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। বিকেলে প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার সভাপতিত্ব করেন, এছাড়া উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সোহরাব হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুসিকান্ত হাজং, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মেহেরাব হোসেন অপি, শাহরিয়ার নাফিস ও সোহাগ গাজী সহ অন্যান্য ক্রিকেট আকাঙ্ক্ষী ও ক্রীড়াবিদরা।
দুইবারের বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের কর্ণধার মিজানুর রহমান এবং বরিশাল বিভাগ ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার খেলোয়াড়রা বিসিবি সভাপতিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন।
বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, প্রত্যেকে জেলা কোচ উপজেলা পর্যায়ের ক্রিকেটারদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবেন — যেমন লেগ স্পিনার, পেসার এবং ব্যাটসম্যানের সংখ্যা। জেলা কোচগণ এসব তথ্য বিভাগীয় দপ্তরে রিপোর্ট করবেন। বিভাগীয় অফিসে একটি ছোট বিসিবি অফিস থাকবে যেখানে একজন ক্রিকেট প্রধান ও একজন হাই পারফরমেন্স কোচ দায়িত্ব পালন করবেন এবং সব ধরনের ক্রিকেট কার্যক্রমের তত্ত্বাবধান করবেন। তবে এই উদ্যোগ মূল ধারার ক্রিকেটের উন্নয়নে কোন বিঘ্ন ঘটাবে না।
বিসিবি সভাপতিও নিজের দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ২৯ দিন হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, হুট করেই কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়। তবে বরিশাল স্টেডিয়ামে বিপিএল হলে যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো, গ্যালারি দর্শকবৃন্দে পরিপূর্ণ হবে বলে তিনি আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন। স্টেডিয়াম উন্নয়নের মাধ্যমে বরিশালকে আরো সক্রিয় ক্রিকেট বিভাগ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বরিশালে গত ১০-১৫ বছরে যথাযথ ক্রিকেট লীগ না হওয়ায় অনেক ক্রিকেটারই হারিয়ে গেছেন। সোহাগ গাজী, কামরুলসহ অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের প্রতি আমাদের গর্ব থাকলেও খেলা না হওয়ার কারণে হাজার হাজার ক্রিকেটার নষ্ট হয়ে গেছে, এ নিয়ে আমরা লজ্জায় ভুগি। বরিশালে ক্রিকেট কোচিং, আম্পায়ারিং, কিউরেটরিং কোর্সের অভাব রয়েছে। নতুন অফিসের মাধ্যমে এ সব কার্যক্রম আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্যে বরিশালবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।