এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল নিজেদের দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত করেছে। ফিফা র্যাংকিংয়ে নিজেদের ছয় গুণের মতো এগিয়ে থাকা মিয়ানমারকে ২-১ গোলে পরাজিত করে নারীরা আশার আলো জ্বালিয়েছেন।
ইয়াঙ্গুনের থুউন্না স্টেডিয়ামে মাঠে নেমে প্রথমার্ধেই জাদুকরী এক গোল করেন ঋতুপর্ণা চাকমা। ১৮ মিনিটে বাঁ পায়ের নিখুঁত ফ্রি কিক শটে বল জালে গড়িয়ে বাংলাদেশের উদ্বোধনী গোল আসে। বিরতির আগ পর্যন্ত মিয়ানমার গোল ভাগাভাগির যথেষ্ট চেষ্টা করেও গোল পায় না, যেখানে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমার প্রাণপণে কিছু অসাধারণ সেভ ম্যাচটিকে তাদের পক্ষে রেখেছিল।
দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই মিয়ানমার আক্রমণ বাড়ায়, কিন্তু ৭১ মিনিটে আবারও বিতাড়িত করেন প্রতিপক্ষকে ঋতুপর্ণা। পাচঁ ফুটের ছোট খেলোয়াড়টি প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে পেনাল্টি বক্সের বাঁপ্রান্ত থেকে দুরন্ত এক শটে বল জালে পাঠিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।
ম্যাচের শেষ দিকে অবশ্য উইন উইন নামে এক মিয়ানমার খেলোয়াড় গোল করতে সক্ষম হলেও তা বাংলাদেশের জয় বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। বাংলাদেশ দলের পিটার বাটলার কোচের নেতৃত্বে এই জয় এশিয়ান কাপের মূল পর্বে ওঠার সম্ভাবনাকে অনেকটাই শক্ত করেছে। ৫ জুলাই গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার আগে বাংলাদেশের মেয়েরা মনোযোগ দিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ম্যাচে অন্তত পয়েন্ট অর্জন করলেই প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলা নিশ্চিত হবে।
মিয়ানমারের বাড়িতে বিপজ্জনক পরিবেশে দলটি দারুণভাবে আত্মপ্রত্যয় দেখিয়েছে। যদিও রক্ষণভাগে কিছু ক্ষেত্রে এলোমেলো ধরা পড়েছিল, গোলে দুইবার জড়াতে সক্ষম হওয়ায় ঋতুপর্ণা চাকমার অবদান অপরিসীম। তার বল কাটানো, ড্রিবলিং এবং নিশানায় হাত খরচানো ফুটবল দেখার মত ছিল। বাংলাদেশের রক্ষক রুপনা ও ডিফেন্ডারদের সতর্কতা এবং সামগ্রিক একাগ্রতা নিশ্চিত করেছে জয়।
সব মিলিয়ে এই জয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল নতুন ইতিহাস গড়ার পথে একটি বড় ধাপ এগিয়ে গেল। ফুটবলপ্রেমীদের আশায় ভরপুর করে রাখলো এই উল্লেখযোগ্য সাফল্য।