ঢাকা | শনিবার | ১৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

গোপালগঞ্জে এখনও থমথমে পরিবেশ, জনমনে আতঙ্ক

গোপালগঞ্জে সহিংসতার পর তৃতীয় দিনের মতো কারফিউ চলছে। এর ফলে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক

বিরাজ করছে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকেই দেখা যায়, জেলা শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রায়

ফাঁকা। দু-একটি ছোট যানবাহন ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়েনি।

এদিকে, ছোটবড় সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন

সাধারণ ক্রেতা এবং সেবাপ্রত্যাশীরা। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। গোটা

গোপালগঞ্জজুড়ে বিরাজ করছে থমথমে পরিবেশ।

সকাল থেকে বিভিন্ন সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা লক্ষ করা

যায়নি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের উপস্থিতি বাড়ে।

আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। এর মধ্যে বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত

শিথিল থাকবে। এরপর সন্ধ্যায় পুনরায় বিবেচনা করে কারফিউ শিথিল অথবা বাড়ানো হতে

পারে।

এর আগে, বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে ২২ ঘণ্টার কারফিউ শুরু হয়, যা চলে

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এরপর সেটি আরও ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়ে আজ সন্ধ্যা ৬টা

পর্যন্ত বলবৎ করা হয়।

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে কারফিউয়ের সময় বাড়ল

পরিস্থিতি বিবেচনা করে কারফিউয়ের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন

ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা

ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ কামরুজ্জামানও একই তথ্য জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সারা দেশে মাসব্যাপী পদযাত্রার অংশ হিসেবে বুধবার গোপালগঞ্জে যান জাতীয়

নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতারা। তার আগের দিন মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে

তারা এটিকে ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ হিসেবে নামকরণ করেন। এরপর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

গোপালগঞ্জের স্থানীয় আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) ও ছাত্রলীগ (নিষিদ্ধ)

নেতাকর্মীরা সেটি প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।

এনসিপি নেতাদের গাড়িবহর গোপালগঞ্জে যাওয়ার পথেই বাধা পায়। এ ছাড়া সেদিন সকালে পুলিশ

এবং ইএনওর গাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ ও

ছাত্রলীগের নেতাদের দায়ী করা হয়।

আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে সহিংসতায় আত্মরক্ষার্থেই বলপ্রয়োগ করা হয়েছে: আইএসপিআর

দুপুরে গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশস্থলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা

চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। হামলার কিছুক্ষণ পর সেখানে পৌঁছান এনসিপি নেতারা। তারা

সেখানে স্লোগান ও বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে তারা মাদারীপুরের উদ্দেশে রওনা দিলে

তাদের গাড়িবহর ঘিরে হামলা করা হয়।

এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এনসিপি নেতাদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরে

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ

বাঁধে। এতে এখন পর্যন্ত ৫ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।