ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

তরুণ ভোটারদের মনোনয়নে শীর্ষে বিএনপি

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘যুব জরিপ-২০২৫’ অনুযায়ী, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তরুণ ভোটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমর্থন পাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দেশের আট বিভাগে ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী দুই হাজারের বেশি তরুণ-তরুণীর ওপর এই জরিপ চালানো হয়, যা রাজনীতি এবং নির্বাচনী ধারা নিয়ে তরুণ সমাজের ধারণাকে স্পষ্ট করছে।

জরিপ থেকে জানা যায়, ভবিষ্যৎ নির্বাচনে বিএনপি আনুমানিক ৩৮.৭৬ শতাংশ ভোট পাবে বলে বিশ্বাস করছেন তরুণরা। তাদের পেছনে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, যা ২১.৪৫ শতাংশ ভোট পাবে বলে তারা মনে করেন। অন্যদিকে, অন্যান্য ইসলামপন্থি দল, এনসিপি ও জাতীয় পার্টির ভোটের হার কম। জরিপ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করত, তাহলে তারা ১৫ শতাংশ ভোট লাভ করতে পারত।

পুরুষ ভোটারদের মধ্যে বিএনপির প্রতি সমর্থন নারীদের তুলনায় কিছুটা বেশি, এবং জামায়াতের ক্ষেত্রেও পুরুষ সমর্থন বেশি। এনসিপির ক্ষেত্রে নারীদের আগ্রহ পুরুষের থেকে বেশি দেখা গেছে ও শহরে দলটির জনপ্রিয়তা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় বেশি।

এছাড়া, দেশের তরুণদের মধ্যে ৯৩.৯৬ শতাংশ আশাবাদী যে আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। ৭৬.৭৮ শতাংশ তরুণ ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যদিও ৪.১৪ শতাংশ ভোট দিতে অনিচ্ছুক।

জরিপে উঠে এসেছে, রাজনীতি বিষয়ে তরুণদের সচেতনতা এখনো সীমিত। মাত্র ২৩.৩৭ শতাংশ তরুণ নিয়মিত রাজনীতি অনুসরণ করেন, যেখানে ৩৭.৫৪ শতাংশ একেবারে আগ্রহী নন। নারীদের মধ্যে রাজনীতিতে আগ্রহ না থাকার হার পুরুষদের তুলনায় বেশি।

রাজনৈতিক দলের প্রতি তরুণদের আস্থা অনেকাংশে কম। মাত্র ১১.৮২ শতাংশ মনে করেন, রাজনৈতিক দলগুলো দেশের প্রকৃত সমস্যাগুলো মেনে চলে, তবে প্রায় অর্ধেক (৪৯.৪২ শতাংশ) একেবারেই তা বিশ্বাস করেন না।

তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি প্রচণ্ড বেশি; ৫৬.৪ শতাংশ বিশ্বাস করেন যে প্রয়োজনীয় সংস্কার অবশ্যই বাস্তবায়িত হলে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু ৮২.৭ শতাংশ তরুণ রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

তরুণরা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে পক্ষপাতহীনতা, স্বজনপ্রীতি ও সহিংসতা বন্ধের প্রত্যাশা রাখে। ৫৪ শতাংশ চায় সুশৃঙ্খল নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান পুনঃপ্রতিষ্ঠা হোক। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দেশের ভবিষ্যতের জন্য অনুকূলে নয়, এ দৃষ্টিকোণও তুলে ধরেছে তরুণ সমাজ।

জরিপ পরিচালনা প্রতিষ্ঠানগুলি জানিয়েছে, জুলাই আন্দোলনের পরবর্তী সময়ে তরুণদের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের বিষয়ে অভিমত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে তরুণদের দাবী ও আকাঙ্ক্ষাগুলো চিহ্নিত ও উপস্থাপন করা হয়েছে, যা নীতিনির্ধারণী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং তাদের পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হবে।