ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পে রূপান্তর আনার লক্ষ্যে এনইউবির সেমিনার

দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং কার্বন নিঃসরন—এই তিনটি সামাজিক ও পরিবেশগত সংকটের সমাধানে ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এনইউবি) আয়োজিত এক সেমিনারে।

রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আয়োজিত “The Three Zero Theory and Its Transformational Impact on Bangladesh’s Textile Industry” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতে পরিবেশ এবং মানবজীবনের টেকসই ভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্য রূপান্তরমূলক পরিকল্পনার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বের প্রবক্তা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দর্শনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে, এন্ড হি এম-এর সাসটেইনেবিলিটি বিশেষজ্ঞ পার্থ রায় বলেন, “দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব আমাদের প্রচেষ্টার ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। যদি এটি বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতে সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তাহলে আমরা বৈশ্বিকভাবে এই খাতে নেতৃত্ব দিতে পারব।” তবে তিনি নীতিগত সহায়তা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখ করেন।

সেমিনারে অংশ নেওয়া GSCS ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের টেকনিক্যাল ম্যানেজার সাফায়েত বিন ইসলাম বলেন, “সাসটেইনেবিলিটি এখন আর বিকল্প নয়, এটি শিল্প খাতের অপরিহার্য বাস্তবতা। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করাই আগামী দিনের টেক্সটাইল শিল্পের প্রধান চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, “‘থ্রি জিরো’ শুধু একটি তত্ত্ব নয়, এটি একটি বাস্তবভিত্তিক রূপান্তরের মডেল যা আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করার ক্ষমতা রাখে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা ও কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে এর যথার্থ রূপরেখা তৈরি করা সম্ভব।”

সেমিনারে জানানো হয়, এনইউবির টেক্সটাইল বিভাগ ইতোমধ্যে বর্জ্য পানি পুনঃব্যবহার, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমানো, পরিবেশবান্ধব ডাইং প্রযুক্তি, এনার্জি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি এবং আগুন প্রতিরোধী-তাপ নিরোধক কম্পোজিট তৈরির মতো বিষয়ে বিভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করছে।

বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক জি এম ফয়সাল ‘থ্রি জিরো’ ভিত্তিক একটি গবেষণা মডেল উপস্থাপন করেন, যেখানে দক্ষ মানবসম্পদ গঠন, সবুজ এনার্জি ব্যবহার এবং বর্জ্য পুনর্ব্যবহারকেই মূল ভিত্তি হিসেবে রাখা হয়েছে। এই গবেষণা মডেল টেক্সটাইল শিল্পের টেকসই উন্নয়নে নতুন দিশা প্রর্দশিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।