বার্সেলোনার মূল দলে ১৭ বছর কাটিয়েছেন লিওনেল মেসি। দুই দশক আগে পেশাদার ফুটবল জীবনের শুরুটা হয়েছিল এই আর্জেন্টাইন মহাতারকার। সেসময় কেউ মনে করতে পারেনি একদিন ছোট এক মেয়ে বয়সের এই ফুটবলার বিশ্ব ফুটবলের শ্রেষ্ঠ হয়ে উঠবেন। আজ, ২০ বছর পেরিয়ে, মেসি শুধুমাত্র ফুটবল ইতিহাসের সেরা নামই নন, তিনি রেকর্ড, পুরস্কার এবং অসাধারণ সাফল্যের এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী পারফরম্যান্স গড়ে তুলেছেন।
আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে টানা চারটি বড় শিরোপা জয় করেছেন মেসি — ২০২১ ও ২০২٤ সালের কোপা আমেরিকা, ২০২২ সালের ফিনালিসিমা, এবং স্বপ্নের ২০২২ সালের বিশ্বকাপ। জাতীয় দলের হয়ে এই বিরল অর্জন ছিল এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় যা মেসির ফুটবল যাত্রাকে আরও দীপ্তিময় করেছে।
তবে সবসময় তাকে সবচেয়ে বেশি মনে রাখা হয় বার্সেলোনার ‘নম্বর ১০’ হিসেবে। ১৭ বছর ধরে ক্লাবের হয়ে সর্বমোট ৭৭৮টি ম্যাচ খেলে মেসি করেছেন নজিরবিহীন ৬৭২টি গোল এবং দিয়েছেন ৩০৩টি অ্যাসিস্ট। তার নেতৃত্বে বার্সেলোনা জিতেছে ৩৫টি ট্রফি, যা ক্লাব ইতিহাসে সর্বোচ্চ। একক ক্লাবে সর্বোচ্চ গোল করার মেলেনিয়াম রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন তিনি, যা পেলেরও ছিল অতিক্রম করা কঠিন।
২০১২ সালে একটি বছরেই ৯১টি গোল করে ফুটবল বিশ্বে একটি অনন্য রেকর্ড গড়ে তোলেন মেসি। চ্যাম্পিয়নস লিগে ছয়বার সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন, ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শু জিতেছেন ছয়বার, আর লা লিগায় আটবার ‘পিচিচি’ ট্রফি হাতবদল করেছেন।
জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ এবং কোপা আমেরিকার মঞ্চেও তার প্রতিভার ছাপ অনস্বীকার্য। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন, ২০২১-এ ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা জয় করেছিলেন অনেক কাঙ্ক্ষিত আন্তর্জাতিক শিরোপা। ২০২২ সালে বিশ্বকাপ জিতে তিনি সমস্ত অসম্পূর্ণতা পূর্ণ করেছেন। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে সোনার পদক অর্জনও তার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
দীর্ঘ ২১ বছর পর ২০২১ সালে বার্সেলোনা ক্লাব থেকে বিদায় নিলেও, ‘নম্বর ১০’ জার্সি গায়ে মেসির প্রতি পদক্ষেপ আজও ফুটবল ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। গোল, অ্যাসিস্ট, রেকর্ড এবং ট্রফির বাইরেও, বার্সেলোনার ‘নম্বর ১০’ হিসাবে লিওনেল মেসি চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি হয়ে থাকবেন।