ঢাকা | সোমবার | ২৮শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩রা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

মেসির পায়ে ফুটবলের জাদুর এক ছোঁয়া

ফুটবল খেলার সবচেয়ে চাপসজ্জিত মুহূর্তগুলোর একটি হলো প্রতিপক্ষ দলের বক্সের ছোট্ট ‘ডি’ বলে পরিচিত এলাকায় বল পজিশনে রাখা। সেখান থেকে কয়েক পা দূরে দাঁড়ানো ৩৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি, যাকে ফুটবলপ্রেমীরা একদিকে ‘অমরত্ব’ আরেকদিকে ‘ইমমর্টাল’ নামে ডাকে, তখন মাঠে ফুটবলের নিষ্ঠুর ও সুন্দর সঙ্গীত বাঁধেন। তিনি যে এখনও কীভাবে সবুজ ও প্রফুল্ল থেকে খেলায় রাজত্ব করতে পারেন, তা দেখাতে পার্ন।

মেসির ক্যারিয়ারে এমন কোনো শিরোপা নেই যা তার ঝুলিতে নেই। দীর্ঘ চলার পরও সেই তরুণীত্ব, সেই তাজা প্রাণোচ্ছ্বাস ফুটবল মাঠে তার বারবার প্রত্যাবর্তন ঘটায়। অন্যদের চাওয়া হয় জীবনের স্বার্থকতা, কিন্তু মেসির চাওয়া ফুটবলের প্রতি প্রেমই প্রায় এক জীবনের বাসনা। সেই ভালোবাসার প্রতিফলন মেসির প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি স্পর্শ ও गोलেই ফুটে ওঠে।

গতকাল রাতের ম্যাচে, আটলান্টায় ক্লাব বিশ্বকাপে পোর্তোর বিপক্ষের বিপরীতে গোল সমতা ছিল ১-১। মায়ামি ক্লাব যখন ৫৩ মিনিটে একটি ফ্রি-কিক পেল, সব দর্শকের মন কাঁপল কারণ সবাই জানতেন, বলটি মেসির পায়েই যাবে। বল বসানোর স্থান থেকে কয়েক পা দূরে দাঁড়িয়ে, বুক ভরে শ্বাস নিয়ে সে যেভাবে বল আঘাত করল, তার বাঁ-পায়ের পোয়ার ও বলের বাঁক যেন ধনুক থেকে ছোড়া তীরের মতো জালে স্পর্শ করল।

গোল করার পর মেসি দুই হাত ছড়িয়ে একটি শিশুর মতো উল্লাস করলেন, যা মায়ামির মাঠে অন্যরকম এক উৎসবের জন্ম দিল। তার ক্যারিয়ারে আকাশছোঁয়া সাফল্য আর অর্জন থাকা সত্ত্বেও, মেসির ভিতরে থাকা সেই জীবন্ত সবুজ প্রেম ফুটবলকে কখনো ছাড়েনি। তাঁর গোলগুলো শুধু দলকে জিতিয়েই না, দেখার আনন্দ দিয়েও ভরিয়ে তোলে দর্শকদের হৃদয়।

মেসির অর্জিত এই গোলটি বিশেষ, কারণ এটি তাকে ফিফা টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোলদাতার মর্যাদা এনে দিয়েছে। ২৫টি গোলের বিশ্বরেকর্ডটি ব্রাজিলিয়ানের কিংবদন্তি মার্তাকে পেছনে ফেলে তিনি অর্জন করলেন। মেসি শুধু মায়ামির নয়, পুরো ফুটবল বিশ্বের জন্যই এক অনবদ্য, যুগান্তকারী নায়ক। ১৩১ বছর ধরে ফুটবল ইতিহাসে গড়ায় যাওয়া বড় বড় ক্লাব ও অনন্য খেলোয়াড়দের মাঝে মেসি যেন এক প্রজ্বলিত তারকা, যার আলো কখনো ম্লান হবে না।

মেসির খেলা দেখলে বোঝা যায়, তিনি কেবল একজন ফুটবলার নন, তিনি ফুটবলের এক জীবন্ত কিংবদন্তি, যার প্রতিটি পদক্ষেপে মিশে আছে ফুটবলের মাধুর্য ও চিরন্তনতা।