ঢাকা | মঙ্গলবার | ২২শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৭শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

রুহুল কবির রিজভী: হাসিনার আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ডাকাতদের আখড়া

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আগে আমরা নৌকায় অনেক দূর যেতাম, তখন মাঝি বলত চুপ করুন, ওই গ্রাম ডাকাতদের গ্রাম। হাসিনার আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ডাকাতদের আখড়া। আমরা অনেক ভয় পেতাম, আতঙ্কে বিশ্ববিদ্যালয় পার হতাম।’

মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রদলের আয়োজনে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বলন ও সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব কথা উল্লেখ করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘মোমবাতি প্রজ্বলন মানে আগামী দিনে গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রের প্রবল প্রতীক এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার জায়গা। এখানে দাঁড়িয়ে আমি ৫২ এবং ৬৯ সালের সেই শিক্ষার্থী আন্দোলনের কথা মনে করছি, যেখানে স্বাধীনতার বাতাস বইছিল।’

রিজভী অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা বলেছিলেন, যদি বাধা দেওয়া হয় তাহলে সব বন্ধ করে দেওয়া হবে। নানা ফন্দি করে ছাত্রদের স্তব্ধ রাখা হবে। কিন্তু এসব বাধা সত্ত্বেও ছাত্রদের গণতন্ত্রের সংগ্রাম থেমে যায়নি। ৩৬ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা আলোক প্রজ্বলনের মাধ্যমে এই সংগ্রামের সূচনা করছি।

তিনি আরও বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার পেটুয়া বাহিনীর হাতে ছাত্রদলের অনেক নেতা-কর্মী গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন। নব্বই ও আশির দশকে যেভাবে তারা কাজ করেছে, সেই একইভাবে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও তাদের ভূমিকা ছিল। এই সংগ্রাম এখনও বাধাহীন নয়, আরও প্রতিবন্ধকতা আসছে। সেই বাধা পেরিয়ে আমরা গণতন্ত্রের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করব।’

কর্মসূচিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘জুলাই মাসের শুরুতে ছাত্রদলের এই আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। জুলাই আন্দোলন একদিনে হয়নি, হাজার হাজার মানুষ জীবনযাত্রা দিয়েছিল। ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান আসাদের রক্তে সাফল্য পেয়েছিল। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গড়ালো। আজ আমরা খুনি হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ চাই। শহীদ ওয়াসিম, সাঈদের রক্ত বৃথা যাবে না।’

তিনি আশ্বাস দেন, ‘বিএনপি আল্লাহর ইচ্ছায় আবারো ক্ষমতায় আসবে এবং তারেক রহমান দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন। ইনশাআল্লাহ তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন।’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন শুরু হয়েছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ছাত্রদল তার নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। রাজপথে একক ছাত্রসংগঠন হিসেবে ছাত্রদল সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে। আন্দোলনে শতাধিক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, যারা আজও আমাদের স্মৃতিতে অম্লান।’

কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, ‘গত পনের বছর ধরে দেশে ফ্যাসিবাদি শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার বিরুদ্ধে ছাত্রদল ও জাতীয়তাবাদী দলগুলো কঠোর সংগ্রামে অংশ নিয়েছিল। ফ্যাসিবাদের আমলে তরুণদের মত প্রকাশের অধিকার ছিল না, কিন্তু এই তরুণরাই আজকের গণঅভ্যুত্থান ঘটিয়েছে।’

কর্মসূচিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকার চার মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।