১৫ বছরের বিরতির পর আবারও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পরীক্ষা চালু হচ্ছে। এবারের পরীক্ষা ধরণ বদলে ২০০৯ সালের আগে যেভাবে সরাসরি বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো, সেই পদ্ধতিতে হবে। এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতোমধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে এবং সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ২০ জুলাই মন্ত্রণালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়, যেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বেগম বদরুন নাহার সভাপতিত্ব করেন। সভায় ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার পুনঃবর্তনের ব্যাপক আলোচনা হয়।
গত বছর ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি, সেভাবেই বৃত্তি পরীক্ষাও নেয়া হয়নি। কিন্তু এ বছর থেকে দীর্ঘ সময় পর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই পরীক্ষাকে পুনরায় চালু করা হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আগে অষ্টম শ্রেণির নির্দিষ্ট একটি শতাংশ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হতো। তবে এখন বৃত্তি পরীক্ষার নতুন নীতিমালা এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তাই কত শতাংশ শিক্ষার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নেবে তা নির্ধারণ হয় নি।
২০০৯ সালে শেষবার সরকারিভাবে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। তার পর থেকে অষ্টম শ্রেণিতে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা চালু করা হয়। পাবলিক পরীক্ষার আদলে এই পরীক্ষা কার্যকর হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বাড়তে শুরু করে কোচিং নির্ভরতা, যা একদিকে শিক্ষাব্যবস্থাকে ভিন্নদিকে পরিচালিত করে। এই কারণেই বিভিন্ন মহল থেকে ওই পরীক্ষা বাতিলের দাবি উঠেছিল।
পূর্বের সমালোচনার প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা না নিয়ে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হয় একই সিলেবাসে, তৎকালীন সরকারের এই সিদ্ধান্তেও সংশ্লিষ্ট বিতর্ক কমেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরেও গত বছর এই পরীক্ষাগুলো নেয়া হয়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা সম্পর্কেও নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যা চলতি বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। এবার একই ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এসেছে অষ্টম শ্রেণির জন্য বৃত্তি পরীক্ষার পুনরায় প্রবর্তনের। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে।