দীর্ঘদিনের হোস্টেল সংকট ও নানামুখী অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করেছেন
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে একযোগে ক্লাস বর্জন করেন
এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ— শহীদ শামসুদ্দিন ছাত্রাবাসসহ অন্যান্য হোস্টেলগুলোতে বিশুদ্ধ
পানির তীব্র সংকট, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ, জরাজীর্ণ ভবন এবং কক্ষগুলোর
অব্যবস্থাপনা শিক্ষাজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে।
তারা অভিযোগ করেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে পুরো হোস্টেল অন্ধকারে ডুবে যায়, আর পানির জন্য
বাধ্য হয়ে বাইরের দোকান থেকে বোতলজাত পানি কিনে আনতে হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা চিকিৎসক হওয়ার জন্য কঠোর
পরিশ্রম করছি, অথচ মৌলিক চাহিদাগুলোরই সঠিক ব্যবস্থা নেই। এই পরিস্থিতিতে পড়াশোনা
চালিয়ে যাওয়া কষ্টকর।’
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, গত অর্থবছরে হোস্টেলের জন্য বরাদ্দ বাজেটের সঠিক
ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করা হয়নি। তারা দ্রুত ওই হিসাব জনসমক্ষে প্রকাশের দাবি জানান।
এর আগের দিন, বুধবার (৬ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল কলেজ অধ্যক্ষ ডা.
জিয়াউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা হোস্টেল সংকটের বিস্তারিত তুলে ধরে
অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম অনুযায়ী, আগামী শনিবারের (৯ আগস্ট) মধ্যে সমস্যার সমাধানে
সন্তোষজনক অগ্রগতি না হলে, রবিবার (১০ আগস্ট) থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস
ও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।
কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে এখনও কোনো লিখিত প্রতিক্রিয়া
পাওয়া যায়নি।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অধ্যক্ষ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে
বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন অভিভাবক ও প্রাক্তন
শিক্ষার্থী। তাদের মতে, ‘হোস্টেলের পরিবেশ উন্নত না হলে, মেডিকেল শিক্ষার মানও
ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শিক্ষার্থীরা এখন প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছেন। শনিবারের মধ্যে
দাবি পূরণ না হলে রবিবার থেকে ক্লাস বর্জনের ঘোষণা শিক্ষাঙ্গণে উত্তেজনা সৃষ্টি
করেছে।