নড়াইল-যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়কের প্রায় ৭০ কিলোমিটার অংশের সড়ক প্রশস্তকরণ এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা দাবি করছেন, পদ্মা ও মধুমতী সেতু চালুর পর থেকে এই পথে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে পার হওয়ার পর নড়াইল-বেনাপোল সড়কের এই সঙ্কীর্ণ অংশে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে, যার কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন আর অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করছেন।
নড়াইলের তুলারামপুর হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা ও মধুমতী সেতু চালুর পর ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত আড়াই বছরে এই সড়কে মোট ৬৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৪১ জন নিহত এবং ৯৯ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে সড়কের অপ্রশস্ততা এবং অবৈধ যান চলাচলকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই মহাসড়কে পরিবহন চালকরা জানান, ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল সড়ক খুবই সরু হওয়ার কারণে বিভিন্ন দিক থেকে আসা গাড়িগুলো ক্রসিং করতে বেশি জায়গা না থাকায় প্রায় সময় মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
তুলারামপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, দুর্ঘটনা রোধ করতে এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল সড়কটি প্রশস্তকরণ করা এখন সময়ের দাবি।
২০২২ সালের ১০ অক্টোবর দেশের প্রথম ছয় লেন মধুমতী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে ঢাকা, যশোর, বেনাপোল, খুলনা, সাতক্ষীরা, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যান্য জেলা থেকে বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন পদ্মা ও মধুমতী সেতু দিয়ে নড়াইল রুটে চলাচল করছে। কিন্তু যানবাহনগুলো ক্রসিং কিংবা ওভারটেকিংয়ের সময় পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে সড়কে নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটছে।
নড়াইল সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নড়াইল হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত প্রায় ১৩০ কিলোমিটার সড়ক ছয় লেন করার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এছাড়াও মধুমতী সেতুর নড়াইল প্রান্ত থেকে যশোর পর্যন্ত সড়ককে ২৪ ফুট থেকে দুই পাশে ১২ ফুট করে আরও প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো দুর্ঘটনা কমাতে এবং চলাচল সহজ করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
