২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.০৫ লাখ হেক্টর জমিতে। এই পরিমাণ জমিতে সফলভাবে পাট চাষাবাদের জন্য প্রায় ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টন পাট বীজের প্রয়োজন হবে।
সোমবার বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) আয়োজিত বার্ষিক অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় বক্তারা এসব তথ্য জানান। কর্মশালায় পাট উৎপাদন ও চাষ সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনা করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে বার্ষিক পাট উৎপাদন ১৫ লাখ মেট্রিক টন, পাটকাঠির উৎপাদন ৩০ লাখ মেট্রিক টন এবং চারকোলের উৎপাদন ৬ লাখ মেট্রিক টন পর্যন্ত পৌঁছেছে।
কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, ‘পাট নিয়ে আমাদের করার অনেক কাজ এখনও বাকি আছে। পাটের সম্ভাবনা চিরস্থায়ী। তাই কাঁচা পাট নিয়ে অন্যান্য দেশের কাজ এবং বাজার গবেষণায় গুরুত্ব দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেঁধে রাখা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে বিজ্ঞানীদের বাস্তব ও বাজারের প্রেক্ষাপটে গবেষণা করতে হবে। সীমিত জমিতেও কীভাবে পাট উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়, সেদিকেও নজর দিতে হবে।’
বিজেআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. নার্গীস আক্তার জানান, পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে চাষিরা কৃষিঋণের সুবিধাসহ পাট ঋণ এবং পণ্য রপ্তানিতে বিভিন্ন সুযোগ পাচ্ছেন। চারকোল রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকার ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিচ্ছে। দেশে প্রায় ৫০টি চারকোলের কারখানা রয়েছে, যদিও কিছু কারখানা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা অনুবিভাগ) মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলু, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম এবং শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফসহ অনেক অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথি।
এছাড়াও, কর্মশালায় বিজেআরআইয়ের প্রজনন বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. গোলাম মোস্তফা স্বাগত বক্তব্য করেন এবং জিনোম গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম মাহবুব আলী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অতিথিদের মধ্যে আরো ছিলেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল আমিন, কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক মো. মসীহুর রহমান, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমির মহাপরিচালক মো. সাইফুল আজম খান এবং বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন।
এই কর্মশালার মাধ্যমে পাটের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং প্রাসঙ্গিক গবেষণায় নতুন দিকনির্দেশনা পাওয়া গেছে, যা বাংলাদেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।