ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের ওপর আর কোনো হামলা না চালানোর নিশ্চয়তা দিতে পারে, তাহলে তারা পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করতে রাজি। তেহরানে শুক্রবার (১২ জুলাই) বিদেশি কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এ কথা জানান।
আরাগচি বলেন, ‘‘ইরান সবসময় সংলাপের জন্য প্রস্তুত ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। তবে আলোচনার পথ যেন যুদ্ধ বা সহিংসতার দিকে না গড়ায়, তার জন্য যথাযথ নিশ্চয়তা অবশ্যম্ভাবী।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ইসরায়েলের সঙ্গে চলা দ্বাদশ দিনের সংঘর্ষ এবং ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে আমরা শিখেছি, কেউ যেন আর এ ধরনের হামলা চালায় না। এসব হামলা পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানার মাধ্যমে আলোচনা আরও কঠিন করে তোলে।’’
এই হামলার পর ইরান জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে, যার ফলে আইএইএ’র পরিদর্শকরা দেশটি ত্যাগ করতে বাধ্য হন। আরাগচি জানান, এখন থেকে আইএইএ’র কোনো অনুরোধ ‘ঘটনাভিত্তিক এবং স্বার্থ বিবেচনায়’ মূল্যায়ন করা হবে এবং ভবিষ্যতে যে কোনো পরিদর্শন ইরানের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ ও পরিদর্শকদের নিরাপত্তা বিবেচনায় নির্ধারিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সতর্ক করেন, যেসব পারমাণবিক স্থাপনাগুলো হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে এখনও অব্যবহৃত বিস্ফোরক ও বিকিরণযুক্ত উপাদান ছড়ানো রয়েছে, যা ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা আমাদের ভূখণ্ডের মধ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখব,’’ যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বহুবার অসম্মতি জানিয়েছে।
ইসরায়েল দাবি করেছে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের একটি ধাপ অতিক্রম করেছিল বলেই হামলা চালানো হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও আইএইএ জানিয়েছেন, ইরান ২০০৩ সালের পর থেকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কোনো সক্রিয় কর্মসূচি পরিচালনা করেনি, যদিও শতকরা ৬০ ভাগ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।
গত সোমবার (৭ জুলাই) ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান একটি সাক্ষাৎকারে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ফলে তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এখনও পুরো পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা করা যায়নি।