ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ১৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২২শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা প্রসারে বিশ্ব এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সাথে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এমওইউ স্বাক্ষর

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা উন্নয়নে নতুন একটি দিক প্রসারিত হলো। দেশে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়েছে। আজ শুক্রবার, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এই গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিটি ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে সম্পন্ন হয়।

এমওইউ চুক্তিতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা জনাব আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সভাপতি জনাব নেজমেদ্দিন বিলাল এরদোয়ান নিজ নিজ পক্ষে স্বাক্ষর করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে উভয় পক্ষ আন্তরিক ও ফলপ্রসূ একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন, যেখানে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার মাধ্যমে সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের গুরুত্ব নিয়ে গভীর আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশীয় খেলাধুলা যেমন কাবাডি, কুস্তি, বলি খেলা ও নৌকা বাইচ বিশ্বব্যাপী প্রচারে পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

সভায়, ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সভাপতি বিলাল এরদোয়ান বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী এসব খেলাধুলার বিশাল সম্ভাবনা তুলে ধরেন এবং এসব খেলাধুলাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে উন্নীত করার ক্ষেত্রে তার গভীর আগ্রহ ব্যক্ত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্ব এথনোস্পোর্টস ইউনিয়ন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোকে সদস্যপদ প্রদানে আগ্রহী।

বিলাল এরদোয়ান তুরস্কে তার শিক্ষামূলক কর্মকাণ্ড উল্লেখ করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি, শিক্ষা বিনিময় এবং বিষয়ভিত্তিক প্রতিযোগিতার মত কর্মসূচি প্রবর্তনের প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি, তার সংস্থার একটি স্কুল বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠার আগ্রহও প্রকাশ করেন। এছাড়া কক্সবাজারে তার মাতৃস্বজনের সঙ্গে সফরের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা আয়োজনের মাধ্যমে শরণার্থীদের কষ্ট কমাতে সহায়তার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।

তুরস্কের সাংস্কৃতিক মর্যাদা ও বৈশ্বিক অবস্থান সুরক্ষায় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ভূমিকা এবং ২০২৪ সালের বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানে তরুণ সমাজ ও জনগণের অংশগ্রহণের প্রশংসাও সভায় আলোচিত হয়। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ প্রণয়ের মধ্য দিয়ে বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশ তার প্রকৃত ও বিশ্বস্ত অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করণের জন্য কাজ করছে, যেখানে তুরস্ক একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।

তিনি গাজায় চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের নৈতিক অবস্থান এবং নিপীড়িত মুসলিম জনগণের প্রতি তার সহানুভূতির প্রশংসা করেন এবং এই ধরনের অপরাধ মোকাবেলার জন্য কার্যকর আন্তর্জাতিক জোট গঠনের ওপর জোর দেন।

চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশি ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলাগুলোকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আরও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা ওয়ার্ল্ড এথনোস্পোর্টস ইউনিয়নের সহযোগিতায় আশাবাদ প্রকাশ করেন।

বৈঠকের শেষে, আসিফ মাহমুদ বিলাল এরদোয়ানকে আগামী ২০২৫ সালের গ্লোবাল ইয়ুথ সামিটে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, এই সফর দুই দেশের যুব ও ক্রীড়া খাতসহ সকল ক্ষেত্রে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রা যোগ করবে।