বাঙালি সংগ্রামের স্মৃতিধর কবি আল মাহমুদ আজ তার ৯০তম জন্মদিন পালন করছেন। ১৯৩৬ সালের এই দিনে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মৌরাইল এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন এই কবি, যাঁর কাব্য রক্তঝরা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত মুক্তিকামী জনতাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। দ্রোহ, প্রেম, প্রকৃতি ও প্রার্থনার মাধ্যমে তিনি বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের চেতনাকে বইয়ে রেখেছেন।
জীবনভর সাহিত্যের ষোল কলায় অভিজাত এই কবি ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ কয়েকটি কর্মসূচি আয়োজিত হয়েছে। বিকেল ৪টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘‘কবি আল মাহমুদ: স্মৃতি ও শ্রদ্ধা’’ শীর্ষক একটি আলোচনা ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে শিল্প ও সাহিত্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করবেন।
সকালবেলায় ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদ ‘‘আমাদের আল মাহমুদ’’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করেছে। পাশাপাশি আগামীকাল, ১২ জুলাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ভবনে বিকেল ৪টায় কবিতা পাঠ, স্মৃতিচারণ ও সাহিত্য আড্ডার আয়োজন রয়েছে।
অন্যদিকে, কবি ভক্তরা রাষ্ট্রীয়ভাবে কবির জন্মবার্ষিকী পালনের দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, অতীতের স্বৈরাচারী সময়গুলোতে আল মাহমুদের প্রতিভাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছিল, যদিও তার কবিতাগুলো ছিল ছাত্র ও জনগণের মধ্যে বর্নাঢ্য বিপ্লববোধের সঞ্চারক। ভক্তদের দাবি তিনি যে শক্তিশালী ভাষা ও অধিকার আন্দোলনের কবি, তাঁর লেখনীর পাঠ্যপুস্তকে পুনর্বহাল প্রয়োজন। পাশাপাশি তাঁকে গভীরভাবে গবেষণার জন্য ‘কবি আল মাহমুদ ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই সব দাবি কবি স্মরণের অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করে দ্রুত বাস্তবায়নের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
আজকের এই দিন সবার কাছে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে মহান কবির অবদান এবং তার সাহিত্যের উত্তরসূরিতে বাংলা ভাষার মুক্তির যজ্ঞ স্থায়িত্ব রাখতে হবে।