ঢাকা | শনিবার | ৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৪ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

কুড়িগ্রামে একই পরিবারের তিন জনকে খুনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও দ্রুত বিচার ও গ্রেফতার দাবি

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী ভন্দুরচর গ্রামে পরিকল্পিতভাবে একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক প্রতিবাদ সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ জুলাই এই নৃশংস ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন শাহজামালের দুই ভাই ফুলবাবু ও বুলু মিয়া এবং তাদের ভাতিজা নুরুল আমিন। হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে দ্রুত গ্রেফতারে ও ফাঁসির বিচারের দাবিতে ১৬ জুলাই শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার বিভিন্ন স্তরের জনগণ রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়।

মানববন্ধনে স্থানীয় নেতারা ও নিহতদের স্বজনরা বক্তব্য রাখেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ওয়াজেদ আলী, ইকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন, নিহত বুলু মিয়ার স্ত্রী আসকেতারা বেওয়া, কন্যা শাপলা বেগম, ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলোরানী বেওয়া, এবং নুরুল আমিনের স্ত্রী আনজু আরা বেওয়া। তারা এই নৃশংস হত্যার দ্রুত বিচার ও দুষ্কৃতীরা গ্রেফতারের দাবি জানান।

ঘটনার পটভূমিতে জানা গেছে, ১৯ জুলাই ভন্দুরচরের রাজু আহমেদের গরু প্রতিবেশি শাহজামালের ধানের চারা খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শাহজামালের লোকজন গরুকে বেঁধে রাখার দাবি জানিয়েছিল। এরপর রাত সাড়ে ১০টার সময় প্রায় ২০-২৫ জনের একটি দল শাহজামালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলাদের মারধর এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করে। ২০ জুলাই আহত অবস্থায় নুরজাহান রৌমারী থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশ বিষয়টি আমলে না নিয়ে মীমাংসার পরামর্শ দেয়।

অভিযোগের ফলস্বরূপ ২৪ জুলাই রাজু আহমেদের দলের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শাহজামালের পরিবারের ওপর ফের হামলা চালায়। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এবং এই সময় উভয়পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হয়।

২৬ জুলাই নিহতদের স্বজন ও স্থানীয়রা রৌমারী থানার ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়। পরে শাহজামাল বাদী হয়ে ২৪ জুলাই ৩৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।

রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনাটি কুড়িগ্রাম অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর গুরুতর প্রশ্ন তোলে এবং দ্রুত তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে শান্তি প্রত্যাবর্তন প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।