কুষ্টিয়া জেলায় দ্রুত urbanisation আর মানুষের অযত্নপূর্ণ আগ্রাসনের কারণে গাছপালা ও বনভূমি দ্রুতহারে শেষ হয়ে যাচ্ছে, যা প্রাণীজগতের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। গাছ কাটা, কৃষিতে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, কারখানা থেকে ঝরানো রাসায়নিক বর্জ্য এবং অবৈধ শিকার সহ বিভিন্ন কারণে পাখি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর জীবন সংকটে পড়েছে। প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী বহু প্রাণী বিলুপ্তি হচ্ছে এবং কুষ্টিয়াও তার ব্যতিক্রম নয়।
শহর ও গ্রামাঞ্চলের বড় বড় গাছ কেটে ফেলা, কলকারখানার দূষণ, ইটভাটা ও আবাসিক এলাকা তৈরি করার জন্য বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা বেড়েছে, যা পাখিদের বংশ নির্বংশিত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। এক সময় কুষ্টিয়ার বিল ও জলাশয় এলাকায় দল বেধে নামত দেশি সাদা বকসহ বিভিন্ন পাখি, যারা কৃষকের ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফসল রক্ষা করত। এই পাখিদের উপস্থিতি গ্রামের ফসলের জমিতে সুখ ও সম্ভাবনার প্রতীক ছিল।
কিন্তু বর্তমানে ফসলের মাঠ ও শহরের জলাশয়গুলোতে শীতের মৌসুমেও খুবই কম সংখ্যক পাখির দেখা মেলে। কৃষকরা বলেন, আগে জমিতে লাঙ্গল চালানোর সময় পাখিরা কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলের জন্য এক জীবন্ত রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করত। এই অপরূপ দৃশ্য এখন নিদর্শনে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি, কীটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে কৃষি বান্ধব পাখির সংখ্যা ক্রমেই কমছে, যা কৃষকদের জন্যও ক্ষতিকর।
বাংলাদেশ জীব ও বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের সহসভাপতি শাহাবউদ্দিন মিলন বলেন, ‘পাখিরা শুধু পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, তারা কৃষি ও কৃষকদের বন্ধু হিসেবে কাজ করে এবং প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই তাদের আবাসস্থল ও খাদ্যের উৎস সুরক্ষা করা প্রয়োজন। জনসচেতনতা বৃদ্ধি, অবৈধ শিকার ও পাচার বন্ধ করাও জরুরি।’
পরিস্থিতি যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে কুষ্টিয়ার প্রাণবৈচিত্র্য আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে। এর সুরক্ষায় সকল স্তরের মানুষের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবশ্যক।