ঢাকা | বুধবার | ২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

খাদ্যের অভাবে কেশবপুরের কালোমুখো হনুমান বসতি পরিবর্তন করছে

কেশবপুরের ঐতিহ্যবাহী কালোমুখো হনুমানদের সংখ্যা কমছে বন উজাড় ও খাদ্য সংকটের কারণে। প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবে এই হনুমানরা কেশবপুরের নিজেদের সারণি এলাকা ছাড়তে শুরু করেছে, যার ফলে তাদের মৃত্যু পরিস্থিতিও নজরে আসছে। বন্যপ্রাণী রক্ষার দাবি উঠেছে স্থানীয় সমাজে।

জানা গেছে, এক সময় কেশবপুরে কালোমুখো হনুমানদের একটি টেকসই অভয়ারণ্য ছিল। ঘন বনজঙ্গলের কারণে প্রাণীগুলো সেখানে অভ্যস্ত ছিল। তবে দ্রুত বাড়তি জনসংখ্যা, বন উজাড় ও অবৈধ ইটভাটার ফলে বনাঞ্চল সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে হনুমানদের খাদ্যের উৎস সীমিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ি, গত চার-পাঁচ বছরে হনুমানের সংখ্যা ২৫০-৩০০ থেকে কমে বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০-এর মধ্যে নেমে এসেছে।

দেশ বিভক্তির সময় ভারতের মাড়োয়ার ব্যবসায়ীরা যশোরের কেশবপুরে এসে যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান আনে, যেখান থেকে হনুমানদের এই অঞ্চলে বসতি শুরু হয়। তবে আজ সেই হনুমানরা খাদ্যের অভাবে ও নিরাপত্তাহীনতায় বিলুপ্তির পথে। বিশেষ করে পল্লীবিদ্যুতের খোলা তারের সঙ্গে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হনুমান মারা যাওয়ার ঘটনা বাড়ছে।

কেশবপুর উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন জানান, বন উজাড় ও খাদ্যের অভাবে হনুমানদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে এবং তাদের সংরক্ষণে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন জানান, সরকার ও বিভিন্ন এনজিও-এর মাধ্যমে হনুমানদের জন্য নিয়মিত খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে খাদ্য সংকটের কারণে তারা গ্রাম থেকে শহরে বেশি বিচরণ করছে। এই প্রাণীদের রক্ষা ও প্রাকৃতিক বাসস্থান সংরক্ষণে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, যদি বন উজাড় ও খাদ্য সংকটের এই অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী কালোমুখো হনুমানরা পুরোপুরি বিলুপ্তির মুখে পড়বে। তাই এই বন্যপ্রাণীদের রক্ষায় সময়োপযোগী সমাধান জরুরি হয়ে উঠেছে।