ঢাকা | সোমবার | ২১শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

গভীর রাতে ফুলের তোড়া দেওয়ার জন্য বাফুফেকে ২০ লাখ টাকা খরচ

মিয়ানমারের মাটিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল এশিয়ান কাপ ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন, যা দেশের ইতিহাসে একটি গৌরবোজ্জ্বল মাইলফলক। গত শনিবার গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে ফিরে ঢাকায় নেমে, হাতিরঝিলের এম্পিথিয়েটারে বাফুফের আয়োজিত এক সংবর্ধনায় অংশ নেন নারী ফুটবলাররা।

সবাই আশায় ছিলেন যে, বাফুফে তাদের জন্য কোনো বড় সারপ্রাইজ ঘোষণা করবে। কারণ কঠিন তিন ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়রা ক্লান্ত ও ভ্রমণের দাপটে পর্যুদস্ত ছিলেন। তাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল অন্তত কোনো বড় পুরস্কার বা স্বীকৃতি পাবেন তারা। কিন্তু বিপরীতে, বাফুফে তাদের শুধু একটি ফুলের তোড়াই প্রদান করে, যা দেখে খেলোয়াড়রা গভীরভাবে হতাশ হয়।

খেলোয়াড়রা প্রকাশ না করলেও বিভিন্ন মাধ্যমে একাধিকবার জানিয়েছে যে তারা এই ধরনের ছোট সংবর্ধনা না চাই, বরং বাফুফে যদি তাদের কর্মের মূল্যায়ন করত এবং যথাযোগ্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করত তাহলে তাদের মনোবল অনেক বেশি বাড়ত। তারা প্রশ্ন তুলেছে, রাতের ওই গভীর সময় বাফুফে কেন তাদের হাতিরঝিলের খালপাড়ে নিয়ে গিয়ে একটি সাধারণ ফুলের তোড়া দেওয়া হয়েছে, যা বাফুফে ভবনেই দেওয়া যেত।

দুর্ভাগ্যবশত, সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দীর্ঘ ৯ মাস পার হলেও বাফুফের ঘোষিত দেড় কোটি টাকা এখনও খেলোয়াড়দের মধ্যে বিতরণ হয়নি। সম্মান প্রদানের পরিকল্পনা সময় নিয়ে বড় পরিসরে করা যেতে পারত, বিশেষ করে সরকারের সহযোগিতায়। কিন্তু তড়িঘড়িতে এক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় এসে করা সংবর্ধনা আয়োজন এবং তারপরও শুধু ফুলের তোড়া দেওয়া অবাক করার মতো ঘটনা।

বাফুফের একটি সূত্র জানায়, এই সংবর্ধনার জন্য ‘হাইভোল্টেজ’ এবং ‘কে-স্পোর্টস’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োজিত করা হয়েছিল, যার ফলে মোট ২০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যদিও এই বিল পেয়ে বাফুফে কোনো পদক্ষেপ করেনি এবং এ ব্যাপারে জবাবদিহি থেকেও বিরত রয়েছে। তবে পরশু রাতে খেলোয়াড়দের বেতন প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের অসামান্য সাফল্যকে ছায়াও প্রদান করছে এবং প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে খেলোয়াড়দের মনোবল ক্ষুণœ হচ্ছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতে তারা সঠিক সম্মান ও সুযোগ পাবে, যাতে দেশের জন্য আরও গৌরবময় সাফল্য অর্জন করতে পারে।