মিয়ানমারের মাটিতে বাংলাদেশের পতাকা উঁচিয়ে ধরে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন দেশের নারী ফুটবলাররা। প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপ ফুটবলের চূড়ান্ত পর্ব খেলতে যোগ্যতা অর্জন করা এই নারী ফুটবল দল জাতীয় গর্বের এক উজ্জ্বল অধ্যায় লিখেছে। গত শনিবার গভীর রাতে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরে আসেন তারা। ঢাকায় ফিরে আসার ঠিক আগেই, রাত আড়াইটায়, বাফুফে তাদের হাতিরঝিলের এম্পিথিয়েটারে সংবর্ধনা দেয়।
সবার প্রত্যাশা ছিল, বাফুফে নারী ফুটবলারদের জন্য বড় কোনো সারপ্রাইজ ঘোষণার পরিকল্পনা করেছে। কারণ তারা প্রচণ্ড ক্লান্ত ছিলেন—টানা তিনটি কঠিন ম্যাচ খেলার পর ফিজিক্যাল ও মানসিক কষ্টের সঙ্গে ভ্রমণের ক্লান্তিও যোগ হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রত্যাশার বিপরীতে শুধু একটি ফুলের তোড়া তুলে দেয় বাফুফে, যা দেখে খেলোয়াড়রা হতাশ হন।
আলোচনায় এসেছে, ‘‘রাতের সময় ফুলের তোড়া দেওয়ার জন্য আমাদের ঘুম ভেঙে দেওয়া প্রয়োজন ছিল কেন? এত দূর থেকে এসে বাফুফে ভবনেই তো টু হল হতো এই সংবর্ধনা। আমরা সারপ্রাইজ আশা করেছিলাম, কিন্তু পেয়ে গেলাম শুধু একটি ফুলের তোড়া। বাফুফে কিছু দিতে চাইলেও তা কোনো ঘোষণা করেনি।’’
খেলোয়াড়েরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে আফসোসের কথা জানিয়েছেন। সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও বাফুফে থেকে অনুমোদিত দেড় কোটি টাকার পুরস্কার এখনও পাননি তারা। বাফুফে ঘোষণা দিয়েছিল নিজস্ব অর্থায়নে পুরুস্কার দেওয়া হবে, যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এশিয়ান কাপ ফুটবলে খেলার অর্জনটি উদযাপনের জন্য সরকারের সাথে সমন্বয় করে বড় পরিসরে সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা যেত। তবে তা না করে তড়িঘড়ি সংবর্ধনা আয়োজন এবং শেষে শুধু ফুলের তোড়া দেওয়ায় খেলোয়াড়দের মনের মধ্যে ঘাটতির অনুভূতি আরও বেড়ে যায়।
বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, গভীর রাতে ওই সংবর্ধনা আয়োজনের কারণে ২০ লাখ টাকার বিল এসেছে, যা হাইভোল্টেজ এবং কে-স্পোর্টস নামে দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিকল্পিত ছিল। বাফুফে এ বিল গোপন রেখেছে। পরশু নামমাত্র বেতনের একটি কিস্তি খেলোয়াড়দের প্রদান করা হয়েছে, তবে বড় অংকের পুরস্কার পাওয়া এখনো দূরের কথা। এই পরিস্থিতি দেশের গৌরবময় নারী ফুটবল দলের জন্য এক বড় ধাক্কা বলে ফুটবল মহল মনে করছে।