ঢাকা | রবিবার | ২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২রা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে হামাস

গাজার সংকটময় পরিস্থিতিতে ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া জানিয়েছে হামাস। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে কাতারে চলা গোপনীয় আলোচনা থেকে কোনো সমাধান না আসার পর বৃহস্পতিবার এই প্রস্তাবে সম্মতি জানানো হয়েছে।

হামাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, “অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোও মধ্যস্থতাকারীদের কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে।”

দোহায় আলোচনায় যুক্ত এক ফিলিস্তিনি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, হামাস তাদের শর্তাবলীতে কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করেছে, যার মধ্যে রয়েছে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের শর্ত শিথিলকরণ, ইসরাইলি বাহিনী যেসব এলাকা থেকে সরে যাবে তার সুনির্দিষ্ট মানচিত্র প্রদান এবং যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার নিশ্চয়তা।

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার লক্ষ্যে হামাস ও ইসরাইলের প্রতিনিধিরা দোহায় মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পরোক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সইয়ের পাশাপাশি ইসরাইলের বন্দী থাকা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি।

২০২৩ সালে হামাসের হামলায় মোট ২৫১ জন ইসরাইলি জিম্মি হন, যার মধ্যে বর্তমানে গাজায় ৪৯ জন বন্দী রয়েছেন। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এর মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে।

দুই সপ্তাহ ধরে চলা আলোচনায় এখনো কোনো চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি, উভয় পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করে চলেছে। ইসরাইল যুদ্ধবিরতির জন্য কঠোর শর্ত দিয়েছে, যার মধ্যে আছে হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ভেঙে দেওয়া। অপরদিকে, হামাস চায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার এবং গাজায় মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশ।

ইসরাইল সরকারের মুখপাত্র ডেভিড মেনসার বুধবার বলেন, “ইসরাইল কাতারের প্রস্তাব এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের হালনাগাদ প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, তবে হামাস এখনও সেগুলোতে সম্মতি দেয়নি।” তিনি আরও জানান, ইসরাইলি প্রতিনিধি দল দোহায় অবস্থান করে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

অন্য দিকে, যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এই সপ্তাহে ইউরোপ সফরে যাবেন যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা করিডোর নিয়ে আলোচনা করতে।

একই সাথে, বুধবার ১০০টিরও বেশি ত্রাণ সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে সতর্ক করে জানিয়েছে, গাজায় ‘চরম খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে’, যা স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়াবে।

এতদিন যুদ্ধবিরতি এবং সহায়তা নিয়ে চলছে জটিল রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সংঘাত, ফলে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন এবং দুষ্প্রাপ্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার বিষয়ে তৎপরতা বাড়ানো প্রয়োজন।