অভিযানে অসাধারণ অবদানের জন্য প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) বাংলাদেশের কোস্টগার্ডের টাগবোট ‘বিসিজিটি প্রমত্ত’ এবং এর ক্রুদের ‘প্রশংসাপত্র’ দিয়েছে। এই গৌরবময় তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ।
গত বছরের ৫ অক্টোবর, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে কোনো তেলবাহী জাহাজ ‘এমটি বাংলার সৌরভ’-এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই দূর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে ‘বিসিজিটি প্রমত্ত’ তৎক্ষণাৎ দ্রুত ও কার্যকরভাবে অগ্নিনির্বাপণ পরিচালনা করে এবং সামুদ্রিক পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
ট্যাংকারে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণ ও দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আগুন সামুদ্রিক জীববৈচিত্রের জন্য অতি বৃহৎ হুমকি তৈরি করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশের কোস্টগার্ডের সাহসী নাবিকরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কার্যকর উদ্ধার অভিযান শুরু করে এবং ৪৮ জন নাবিককে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। একই সঙ্গে তারা তেল ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ব্যারিয়ার স্থাপন ও বর্জ্য সংগ্রহের মাধ্যমে গভীর সমুদ্রে দূষণ প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
এই সাহসিকতা ও পেশাদারিত্বের জন্য আইএমও ‘বিসিজিটি প্রমত্ত’ এবং এর ক্রুদের ‘লেটার অফ কমান্ডেশন’ প্রদান করেছে। আইএমও এই স্বীকৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশের কোস্টগার্ডের পরিবেশ সুরক্ষা, নিরাপত্তা রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক নৌ নিরাপত্তা নীতিমালা অনুসরণের প্রশংসা করেছে।
ইতিহাসে এটি দেশের জন্য একটি গৌরবময় মুহূর্ত, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিপত্তি আরো শক্তিশালী করেছে। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ বলেন, “বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সর্বদা সমুদ্রসীমায় নিরাপত্তা বিধান, বিপদগ্রস্তদের উদ্ধার ও পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভবিষ্যতেও আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার দায়িত্বে অবিচল থাকব।”
এই স্বীকৃতি কোস্টগার্ডের আধুনিকতা ও দক্ষতার সাক্ষ্য, যা যেকোনো দুর্যোগে সাহস ও কার্যকারিতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার সক্ষমতা প্রদর্শন করে।