ঢাকা | শনিবার | ১৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

চবির কলা অনুষদের ডিনের পুকুর লিজ প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন একটি পুকুর কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল শাহীন খান নিয়ম নমানা ও সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে কোন ধরনের বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি চালক শহরমুল্লককে লিজ দিয়েছেন।

অন্যান্য সূত্র থেকে জানা গেছে, কলা অনুষদের পশ্চিম পাশে অবস্থিত এই পুকুরটি লিজ দেওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মকানুন সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ কোনো সরকারি সম্পত্তির পুকুর, খাল বা কৃষি জমি লিজ দেওয়া হলে অবশ্যই দাপ্তরিক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতাকে লিজ দিতে হয়। কিন্তু এই লিজ প্রক্রিয়ায় তেমন কোনো ধরণের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি এবং ৫ বছরের জন্য মাত্র ৩০ হাজার টাকায় পুকুরটি শহরমুল্লকের কাছে লিজ দেওয়া হয়েছে।

আরো বিস্ময়ের বিষয় হলো, যদিও চুক্তিতে শহরমুল্লকই একক লিজগ্রহীতা হিসেবে নাম উল্লেখ করেছেন, বাস্তবে ওই পুকুরে মুখিয়ে মাছ চাষ করছেন শহরমুল্লকসহ আরো ৫ জন, যাদের মধ্যে ৪ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চালক এবং ২ জন কর্মচারী।

এ ব্যাপারে শহরমুল্লক বলেন, “আমি ডিন স্যারের মাধ্যমে লিখিত চুক্তির অধীনে পুকুরটি লিজ নিয়েছি এবং ৩০ হাজার টাকা প্রদান করেছি।”

অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল শাহীন খান নিজেও স্বীকার করেন, “শহরমুল্লক আগে থেকেই পুকুরে কিছু গাছ লাগিয়েছিল। এটি বিবেচনায় নিয়ে বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের মিটিংয়ে রেজুলেশন করে তাকে লিজ দেওয়া হয়েছে। আমরা তখন ভেবেছিলাম এটি কলা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত, পরে জানলাম এটি কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে। যেহেতু লিজ দিয়েছেন, এখন আর অনেক কিছু করার থাকে না।”

অন্যদিকে, কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী জানান, “ডিন অফিস থেকে সরাসরি লিজ দেওয়া সম্ভব নয়। আমি ইতোমধ্যে ডিনকে আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছি। ঠিক নিয়ম মেনে আবেদন করলে লিজ দেওয়া হবে।”

চবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আমি আগ পর্যন্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানতাম না, আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম। আমি অবশ্যই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রধান এবং কলা অনুষদের ডিনের সঙ্গে আলোচনা করবো এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”

এই ঘটনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় সচ্ছতা ও নিয়ম মেনে চলার বিষয়ে সুবিচার চ্যালেঞ্জ তুলে দিচ্ছে, যা দ্রুত তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি মনে হচ্ছে।