ঢাকা | বুধবার | ৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকার ব্যর্থ: কাদের গনি চৌধুরী

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের

সদস্যসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, এই সরকার সাংবাদিকদের দাবি ও জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে

ব্যর্থ হয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার এবং ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঠেকাতে কোনো

উদ্যোগ নিতে পারেনি।

তিনি বলেন, সাংবাদিক সমাজের দাবি ছিল সাগর-রুনির বিচার, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন

বাস্তবায়ন এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করা। সরকার এসব দাবিও পূরণ করতে পারেনি।

আমরা অবিলম্বে গণতন্ত্রের পূর্ণরূপ দেখতে চাই।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে “ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের

অবসানে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি” উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সমাবেশে

তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)

যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।

ডিইউজে সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন জাতীয়

প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান

শাহীন ও ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করার কার্যকর উদ্যোগ আমরা দেখিনি।

সরকার দৃশ্যমান সংস্কারেও ব্যর্থ হয়েছে। সংস্কারের মুলা ঝুলিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে

রাখার চেষ্টা করছে সরকার। দেশের মানুষ ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার হারিয়েছে, তা

পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন না দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার তৎপরতা ফ্যাসিস্ট হাসিনার

ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। আমরা অবিলম্বে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের

রূপরেখা চাই। সংস্কারের মুলা ঝুলিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টাকে সাংবাদিক সমাজ

মেনে নেবে না।

তথ্য উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি যদি এক/এগারোর আলামত দেখেন, তবে সেটি আপনার

সরকারের ব্যর্থতা। সেই ব্যর্থতার দায়ে আপনার সেদিনই পদত্যাগ করা উচিত ছিল।

রাষ্ট্রীয় পদে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন বালখিল্য আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। এই

দেশের মানুষ কখনোই ১/১১ ঘটতে দেবে না।

তিনি বলেন, তথ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে,

যা আমরা ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছি।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে সাংবাদিকদের ভূমিকা স্মরণ করে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ৩

আগস্টের উত্তাল সময়ে আমরা রাজপথে হাজারের বেশি সাংবাদিক নিয়ে মিছিল করেছি। ৪

আগস্ট যখন কেউ ঘর থেকে বের হতে পারছিল না, তখন ২ হাজারের বেশি সাংবাদিক ও পেশাজীবী

প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করেছেন।

তিনি বলেন, সেই সময় আমাদের চারদিক থেকে ঘিরে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে,

নির্বিচারে গুলি ছোড়া হয়েছে, প্রেসক্লাবে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রেসক্লাবের

চারপাশ তালাবদ্ধ করে রেখেছিল দালালগোষ্ঠী। তবুও আমরা দমে যাইনি। হাসিনার দুঃশাসনের

বিরুদ্ধে ৬৭ জন সাংবাদিক জীবন দিয়েছেন।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যাদের রাজপথে পাইনি,

যাদের চিনিও না, তাদের ‘জুলাই সাহসী সাংবাদিক’ বানিয়ে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

পক্ষপাতদুষ্ট এই তালিকা সাংবাদিক সমাজ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে।