আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যশোরের শার্শা (যশোর-১) আসনে রাজনৈতিক উত্তাপ ক্রমশ বাড়ছে। দীর্ঘদিন পর ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনায় ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ ও আগ্রহ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এই আসনে নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির চার জন মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী সক্রিয় প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছে।
মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সমাবেশ, মিছিল, মিটিংসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। নির্বাচনী মাঠ প্রায় সম্পূর্ণরূপে বিএনপির নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দলীয় মনোভাব বজায় রেখে একত্রে কাজ করছেন। সবাই মিলেই দলকে বিজয়ী করতে প্রতিদিন শার্শার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে নির্বাচন প্রচারণা চালাচ্ছেন।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী দলের পক্ষ থেকে সরাসরি মিছিল-মিটিং করা না গেলেও বিভিন্ন এলাকায় মাদ্রাসায় ঘরোয়া বৈঠক করা হচ্ছে এবং সদস্য সংগ্রহের জন্য ফরম পূরণ চলছে। এবারের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে বিজয়ী করতেই তাঁদের নেতাকর্মীরা ব্যাপক সক্রিয়তা দেখাচ্ছেন।
শার্শা আসনের ১১টি ইউনিয়নে মোট ১০২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ২৯৯২৮০ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৫০৪৪০ জন এবং নারী ভোটার ১৪৮৮৮৩ জন।
বিএনপির পক্ষে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে অত্যন্ত পরিচিত ব্যক্তিত্ব মফিকুল হাসান তৃপ্তি মাঠে রয়েছেন। তিনি দলের সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক এবং সাবেক সংসদ সদস্য। দীর্ঘ ১৭ বছরের রাজনৈতিক জীবনে নানা মামলা-হামলার শিকার হওয়া সত্ত্বেও কখনো দলত্যাগ করেননি। নভেম্বরের শুরু থেকে তিনি জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে মিছিল, মিটিং ও পথসভা করে যাচ্ছেন।
এছাড়াও শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ নুরুজ্জামান লিটনও মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে আছেন। তিনি দলীয় কার্যক্রমে বিশেষ সক্রিয় এবং গত সরকারের সময় নানা মামলা-হামলার শিকার হন, তবুও দল থেকে বিচ্যুত হননি। নেতাকর্মীদের ও জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি তিনি যেন এবারের প্রার্থী হন।
সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ খাইরুজ্জামান মধু এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি আবুল হাসান জহিরও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে নির্বাচন প্রচারণায় মনোযোগী। তাঁরা বিগত সরকারের আমলে নানা হয়রানির শিকার হলেও দল থেকে বিচ্যুত হননি এবং নির্বাচনী মাঠে সরব ভূমিকা পালন করছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী মাওলানা আজীজুর রহমানও ধর্মীয় ও সামাজিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দলের কর্মীদের নিয়ে সক্রিয়তা বাড়াচ্ছেন। প্রতিদিন দলীয় সদস্য সংগ্রহের জন্য ওয়ার্ড থেকে ওয়ার্ডে ফরম পূরণ চালু রয়েছে।
শার্শা আসনে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামী ছাড়া অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের দৃশ্যমান উপস্থিতি নেই। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, দল থেকে যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে, সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে তার পক্ষে কাজ করব। দলীয় স্বার্থে তারা এক হয়ে নির্বাচন সফল করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছেন।