এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বাংলাদেশে ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় মশা নিধনের কার্যক্রমের দুর্বলতার কারণে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রূপ ধারণ করেছে। চলতি বছরের মে মাসের তুলনায় জুন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরুতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কম ছিল। জানুয়ারি মাসে ১,১৬১ জন, ফেব্রুয়ারি ৩৭৪ জন, মার্চ ৩৩৬ জন এবং এপ্রিল ৭০১ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে মে মাস থেকে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এবং জুন মাসে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। বিশেষত ঢাকা শহরের বাইরের জেলা বরগুনায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে মোট ১০,২৯৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪২৯ জন আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে, তবে এ সময়ে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
এডিস মশার বিস্তার রোধে না-হলে পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার জানান, “মে মাসের তুলনায় জুনে আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে জুলাইয়ে সংখ্যা চার থেকে পাঁচগুণ এবং আগস্টে দশগুণ পর্যন্ত বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৮ জন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন, আর চলতি বছরে মোট ৯,০৮৭ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের হার ৫৯.১ শতাংশ এবং নারীর হার ৪০.৯ শতাংশ।
এদিকে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন রাজশাহী বিভাগের বাসিন্দা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যকর ও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন, বিশেষ করে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকায় মশা নিধন কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। দেশের জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও সচেতন হয়ে 예방 ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসা অপরিহার্য।