ঢাকা | বুধবার | ২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার প্রজনন স্থান ধ্বংস ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ডিএসসিসির বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আজ শনিবার (৫ জুলাই) সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর উদ্যান সংলগ্ন ডিএসসিসি অঞ্চল-০৪ এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা এবং মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করেছে। এ অভিযান মূলত এডিস মশার প্রজনন স্থান ধ্বংসকরণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নিয়োজিত ছিল। রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পরিচালিত অভিযানে ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার নেতৃত্বে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ছয়টায় শুরু হওয়া এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় শতাধিক কর্মী এবং স্থানীয় সোসাইটির মানুষ অংশগ্রহণ করেন। অভিযানের অংশ হিসেবে অঞ্চল-০৪ এর ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৪২ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে ড্রেন, নর্দমা ও ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার করা হয় এবং মশা নিধনের জন্য ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণের অংশগ্রহণে একটি জনসচেতনতামূলক র‌্যালিও অনুষ্ঠিত হয়, যা ডেঙ্গু মোকাবেলায় জনগণের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরেছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণই সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি। ঢাকা শহরের মতো বিপুল জনসংখ্যার এলাকায় শুধুমাত্র প্রশাসনের চেষ্টা যথেষ্ট নয়, প্রত্যেক নাগরিকের নিজ নিজ আঙ্গিনায় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। আমরা যদি সবাই সচেতন হই এবং নিজস্ব জায়গার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করি, তবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, সরকার ‘ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে জাতীয় নির্দেশিকা-২০২৫’ প্রণয়নের কাজ করছে, যেখানে সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদের দায়িত্বও স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হবে।

ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া উল্লেখ করেন, ‘আজকের অভিযান ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমাদের চতুর্থ বিশেষ কর্মসূচি। এর মূল লক্ষ্য হলো স্থানীয় মানুষের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি এবং জনসচেতনতা জোরদার করা। এ অভিযানের সঙ্গে সঙ্গে ডিএসসিসি নিয়মিত মশক নিধন কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করছে। এডাল্টিসাইড প্রয়োগের জন্য ব্যবহৃত ফগার মেশিন প্রতি কীটনাশকের পরিমাণ ৩০ লিটার থেকে বাড়িয়ে ৬০ লিটার করা হয়েছে। তদারকির জন্য অঞ্চলভিত্তিক বিশেষ টিম গঠন করে ঔষধ প্রয়োগ নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এই উদ্যোগ ডেঙ্গু প্রতিরোধে সমাজের সর্বস্তরের পদক্ষেপের প্রমাণ স্বরূপ এবং ঢাকা শহরের সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।