ঢাকা | রবিবার | ২৭শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২রা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

ঢাকায় উদ্বোধন হলো ১৬তম ইনটেক্স বাংলাদেশ এক্সিবিশন

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সফল গার্মেন্টস ক্রেতা, বিপণন এবং সোর্সিং এক্সিবিশন হিসেবে প্রসিদ্ধ ইনটেক্স বাংলাদেশের ১৬তম সংস্করণ আজ রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) তে শুরু হয়েছে। এই তিনদিনব্যাপী আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল সোর্সিং প্রদর্শনীতে বিশ্বের ১০টির বেশি দেশ থেকে ১২৫টিরও বেশি কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে, যা গ্লোবাল ক্রেতা, সরবরাহকারী এবং উৎপাদকদের জন্য একটি গতিশীল ব্যবসায়িক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে।

পোশাক খাতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশের কাঁধে বসে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বাজারে তার উদ্ভাবনী কৌশল এবং উচ্চমানের দ্রুত উৎপাদন ক্ষমতার মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করছে। ২০২৬ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি ৫৬ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করার লক্ষ্যে ইনটেক্সের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে, সাপ্লাই চেইনে বৈচিত্র্য আনতে ও শিল্পে নতুনত্ব প্রদর্শনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, আর অতিথি বিশেষ ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন। এছাড়াও বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এলএবিসিসিআই, কেবিসিসিআই এবং বিজিসিসিআই এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ এখন বিশ্বের পোশাক বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি টেকসই ও মূল্য সংযোজিত পোশাক উৎপাদনের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। উদ্ভাবন, কমপ্লায়েন্স এবং দক্ষ শ্রমিক নিয়োগে কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা টেক্সটাইল ও ফ্যাশন সোর্সিংয়ের পরবর্তী ধাপে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। ইনটেক্স বাংলাদেশের মতো প্ল্যাটফর্ম আমাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে এবং গ্লোবাল প্রতিযোগিতামূলক বাজারে মানসম্পন্ন পণ্য নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

এ বছর প্রদর্শনীতে ভারতের টেক্সপ্রোসিল ও পেডেক্সিল প্যাভিলিয়ন থেকে তুলা, মিশ্র সুতা এবং টেকসই টেক্সটাইল উপকরণ প্রদর্শিত হচ্ছে। চীন টেকনিক্যাল ফ্যাব্রিক আর গার্মেন্টস ট্রিম তুলে ধরেছে। দক্ষিণ কোরিয়া পরিবেশবান্ধব পারফরম্যান্স উপকরণ নিয়ে এসেছে, যেখানে থাইল্যান্ড ও জাপান প্রিমিয়াম শার্টিং ও বোনা পণ্য প্রদর্শন করছে। বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও নিটওয়্যার, ডেনিম ও ভার্টিক্যালি ইন্টিগ্রেটেড উৎপাদন সমাধানের অগ্রণী প্রযুক্তি উপস্থাপন করেছে।

এক্সপোর মান আরও বাড়াতে দুটি ইন্টারেক্টিভ বিজনেস ফোরাম (আইবিএফ) আয়োজিত হয়েছে। প্রথম সেশনে আলোচনা হবে টেক্সটাইল শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রবর্তন এবং দ্বিতীয় সেশনে বৈশ্বিক শুল্ক ও বাণিজ্য পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে রপ্তানি খাতের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করা হবে। এই সেশনগুলোতে শিল্পের শীর্ষ নেতারা অংশ গ্রহণ করবেন, যা ব্যবসায়িক স্থিতিস্থাপকতা ও বৃদ্ধির দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।

প্রদর্শনীতে বিজনেস টু বিজনেস (বি২বি) মিটিং, ভিআইপি নেটওয়ার্কিং ও ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের মধ্যে ম্যাচমেকিং সুবিধার মাধ্যমে সোর্সিং ও ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের পূর্ণাঙ্গ সুযোগ রয়েছে।

ওয়ার্ল্ডেক্স ইন্ডিয়ার আয়োজিত এই ইভেন্টটি বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিজিবিএ, ইপিবি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠনগুলোর ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে।

বাংলাদেশ যখন টেকসই ও উদ্ভাবনী টেক্সটাইল শিল্পের ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ইনটেক্স বাংলাদেশ সারা বিশ্বে দেশের সাপ্লাই চেইনকে সংযুক্ত করার একটি অন্যতম প্রধান প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাবে।