ঢাকা | সোমবার | ২১শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

দিল্লি থেকে পাওয়া যায়নি ভারতীয় দলের বাংলাদেশ সফরের অনুমোদন, সফর অনিশ্চিত

আগামী ১৩ আগস্ট ভারতের ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল। এই সফরে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা নির্ধারিত ছিল। প্রায় দুই মাস আগে থেকেই এই দ্বিপক্ষীয় সিরিজের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। তবুও, এখন পর্যন্ত ভারত সরকার থেকে এই সফরের চূড়ান্ত অনুমোদন মেলেনি, যার ফলে সিরিজটি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।

দিল্লির একাধিক সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, রাজনৈতিক কারণে ভারত সরকার এই সফর নিয়ে দ্বিধান্বিত। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে চলমান কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সফরকে ইতিবাচক বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে না, এজন্য দিল্লি সফরের অনুমোদন দিতে বেগ পেতে হচ্ছে।

সিরিজটি ১৭ আগস্ট থেকে মিরপুরে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন এর আয়োজন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সিরিজটি শেষ হওয়ার তারিখ ৩১ আগস্ট নির্ধারিত ছিল এবং ভারত দল ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ত্যাগ করবে বলে পরিকল্পনা ছিল। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার মধ্যে বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা ও বাংলাদেশের এক সাবেক সামরিক কর্মকর্তার বিতর্কিত মন্তব্য সফর অনিশ্চয়তার পেছনে প্রভাব ফেলেছে।

বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই মন্তব্যের বিষয়ে দ্রুত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সাবেক ওই কর্মকর্তার বক্তব্যের সঙ্গে সরকার কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নয়। কিন্তু এসব সত্ত্বেও ভারতীয় প্রশাসনের অনীহা কমেনি।

অন্যদিকে, ভারতীয় এক গণমাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে, বিসিসিআই শুরু থেকেই এই বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে বেশ অনাগ্রহী ছিল। নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও তাদের প্রধান কারণ। তাই কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সবুজ সংকেত’ ছাড়া বিসিসিআই একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না।

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই সিরিজটি পূর্বনির্ধারিত সময়েই আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, কিন্তু যদি ভারত আগস্টে সফর না করে, তবে ভবিষ্যতের ফাঁকা সময়ে সিরিজটি আয়োজনের চেষ্টা করা হবে।” তিনি আরও জানান, “সফর নিয়ে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য কয়েকটি সফরের ক্ষেত্রেও ভারত সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।”

তবে বাস্তবতা হলো, যদি সফর পিছিয়ে যায়, তাহলে ২০২৫ সালের মধ্যে আর এই সিরিজ আয়োজন করা কঠিন, কারণ সেপ্টেম্বর থেকে এশিয়া কাপের প্রস্তুতি শুরু হবে। এরপর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়রতল্যান্ড সিরিজ আয়োজন করবে, ডিসেম্বরে বিপিএল এবং ফেব্রুয়ারি-মার্চে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে।

সুতরাং, ভারতের সফর না হলে, এই বছর ঘরের মাঠে ভারতকে পাওয়া খুব একটা সম্ভব হবে না বললেই চলে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, বর্তমানে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে বিসিসিআই আদৌ সরকারের অনুমোদন পেয়ে সফরের সঠিক সময়সূচি নির্ধারণ করতে পারবে কি না।