‘মন মোর মেঘেরও সঙ্গী’ এই প্রেরণামূলক স্লোগানের আবহে নওগাঁয় উদযাপন করা হলো বর্ষা উৎসব-১৪৩২। শনিবার (১২ জুলাই) রাত ৮টায় শহরের প্যারিমোহন লাইব্রেরী গ্রন্থাগারে নানা সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই উৎসব। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দলীয় গান পরিবেশন করে অংশগ্রহণকারীরা উৎসবের মেজাজ তৈরি করেন। পরে একের পর এক গানের সুর, নাচ ও আবৃত্তির মাধ্যমে বর্ষার মাধুর্য ফুটে ওঠে।
ওই সময় বর্ষাকথনসহ অনান্য সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাত ১০টায় সমাপ্তি ঘটে বর্ষা বরণ উৎসবের। এই আয়োজন নির্ঘাত ‘নওগাঁ সাংস্কৃতিক ঐক্য’ নামক সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত হয়। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সভাপতি মনোয়ার লিটন ও সাধারণ সম্পাদক মাগফুরুল হাসান বিদ্যুৎ।
অনুষ্ঠানে নাচ, গান ও কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে বারংবার মনে করানো হয় গ্রামীণ বাংলার প্রকৃতির নিস্তার এবং বর্ষার আবেদনের কথা। শিল্পীদের চমৎকার পরিবেশনায় মুগ্ধ হন স্থানীয় সংস্কৃতিপ্রেমী ও শিল্পীরা, যারা আনন্দে ভাসেন বর্ষা বন্দনা করে।
আয়োজকরা জানান, বর্ষা উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে মানুষের প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার ভাব প্রকাশ পায়। এ ছাড়াও এটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের সংহতি এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা জাগরণে ভূমিকা রাখে। শহরের আধুনিক জীবনের ব্যস্ততার মাঝে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের ধারনাকে পুনরুজ্জীবিত করাই এই উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য।
নওগাঁ সাংস্কৃতিক ঐক্য সংগঠনটির সভাপতি মনোয়ার লিটন বলেন, ‘বর্ষা হলো আবহমান বাংলার শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করার উৎস। বর্ষার সঙ্গে বাংলার মানুষের সম্পর্ক বহু পুরোনো ও গভীর। গ্রীষ্মের তীব্র খরতাপের পর বর্ষা এসে প্রকৃতিতে প্রাণ ফিরিয়ে আনে। সাহিত্যের পাতায় বর্ষার চিত্র যেমন উজ্জ্বল, তেমনি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে বর্ষা যুক্ত হয়ে আমাদের নিজেকে আবিষ্কারের একটি মূহূর্ত এনে দেয়। বর্ষার গুরুত্ব প্রকৃতির সবুজের সজীবতায় ফুটে ওঠে, যা আমাদের মনকে শান্তি ও নবজীবনের বার্তা দেয়। এ বছরও বর্ষা যেন আমাদের জীবনে এনে দেয় নতুন তরুণোচ্ছ্বাস আর শান্তির বাণী।’