ঢাকা | সোমবার | ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নড়াইলে অপচিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, খাদিজা সেবা ক্লিনিক সিলগালা

নড়াইলের কালিয়া উপজেলা শহরের খাদিজা সেবা ক্লিনিকে অপচিকিৎসার ফলে এক প্রসূতির মৃত্যু হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) উপজেলা স্বাস্থ্যবিভাগের একটি তদন্ত দল ক্লিনিকটির অপারেশন থিয়েটারসহ পুরো ক্লিনিকটি সিলগালা করেছে।

তদন্তে জানা গেছে, বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের কলাবাড়িয়া গ্রামের কামাল শেখের স্ত্রী লাবনী আক্তারকে খাদিজা সেবা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। বিকালে তাকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জমজ সন্তান জন্ম দেন।

কিন্তু অপারেশনের পর লাবনী আক্তার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ক্লিনিকের পরিচালক খাদিজা পারভিন তাকে দ্রুত খুলনার একটি হাসপাতালে রেফার করেন। হাসপাতালে যাওয়ার পথে লাবনী আক্তারের মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক।

লাবনী আক্তারের দেবর মো. আসলাম হোসেন অভিযোগ করেছেন যে, ক্লিনিকে কোনো অ্যানেস্থেশিয়া চিকিৎসক ছিলেন না এবং রোগীকে অজ্ঞান করেই অপারেশন করা হয়। তিনি বলেন, অপারেশনের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার ভাবীর মৃত্যু হয়েছে। জমজ দুই সন্তান এখনও খুলনা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি আরও জানান, তার ভাই, মা ও বাবা সবাই নবজাতকদের চিকিৎসার জন্য খুলনায় রয়েছেন এবং যখন তারা বাড়ি ফিরে আসবেন তখন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শোয়াইব হোসেন বলেন, ওই ক্লিনিকে সেবিকা ও ডিউটি চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন না এবং কোনো মানসম্মত অপারেশন থিয়েটারও নেই। তিনি জানান, সিভিল সার্জনের নির্দেশে কালিয়া উপজেলা হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা এবং একটি তদন্ত দল ওই ক্লিনিকে গিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দেখতে পেয়েছেন।

ইতিপূর্বে খাদিজা সেবা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অপচিকিৎসার অভিযোগ উঠেছিল এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের জেল ও জরিমানা করে। এর পরেও ক্লিনিকটি সঞ্চালিত হচ্ছিল।

ক্লিনিক পরিচালক খাদিজা পারভিন সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন এবং মামলা করার হুমকিও দিয়েছেন।

সিভিল সার্জন ডাঃ আব্দুর রশীদ বলেছেন, অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগসহ একটি তদন্ত দল ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্লিনিক সিলগালা করা হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে একটি তদন্ত দল গঠন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।