বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যারা নির্বাচনে ভয় পান, তাদের উচিত রাজনীতিতে না থেকে এনজিও বা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করা। তিনি আরও বলেন, ‘‘যাদের নির্বাচনে ভয় আছে, তাদের রাজনীতি করার দরকার নেই। তারা চাইলে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে পারেন বা এনজিওতে যুক্ত হতে পারেন। কিন্তু রাজনীতিতে বেগ পেতে, নির্বাচনের মুখ থেকে পিছিয়ে থাকতে এবং একই সময়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে দেয়া যাবে না।’’
রবিবার (২৭ জুলাই) ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আয়োজনে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’ এর প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
খসরু বলেন, ‘‘যেসব দেশে গণ-অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে, সেখানে বিভাজন, গৃহযুদ্ধ এবং রাষ্ট্র হিসেবে ব্যর্থতার নজির পাওয়া যায়। তবে যারা দ্রুত নির্বাচন করে গণতন্ত্রের পথে ফিরেছে, তারা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে উন্নতি করেছে।’’
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘যদিও এই আন্দোলন নিয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে, তবু কেউ এটিকে ‘হাইজ্যাক’ করার সুযোগ পাবে না। এই আন্দোলন নতুন কিছু নয়, বরং দেশের জনগণের অধিকার আদায়ের দীর্ঘমেয়াদী সংগ্রামেরই অংশ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার না গেলে আমরা বাড়ি ফিরতাম না এবং আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকত।’’
খসরু উল্লেখ করেন, এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের ওপর জনগণের মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তাদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, যদিও বিএনপির নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হয়েছে, বিএনপি কখনোই এর কৃতিত্ব দাবি করেনি।
তিনি বলেন, ‘‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই গণ-অভ্যুত্থান সফল হবে।’’
আমীর খসরু বলেন, ‘‘সবার মধ্যে পূর্ণ ঐকমত্য থাকা জরুরি নয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতপার্থক্য থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু জাতীয় স্বার্থে ঐক্য অপরিহার্য। মতপার্থক্য ছাড়া গণতন্ত্র টিকতে পারে না। আমরা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আসিনি।’’
তিনি যোগ করেন, ‘‘শেখ হাসিনার সরকারের ‘পলায়নের’ পর দেশের জনগণের মনোভাব পরিবর্তিত হয়েছে। যারা এই পরিবর্তন বুঝতে পারছেন না, তাদের কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই।’’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘একটি নির্বাচিত সরকার না থাকায় অনেক পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তা সঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন না এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও সিদ্ধান্ত নিতে অনশন অবস্থায় রয়েছেন।’’