ঢাকা | রবিবার | ২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৫শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

নূরুল হক নুর: অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মদক্ষতায় সর্বোচ্চ পাঁচ নম্বর দেবো

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নুর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গত এগারো মাসে বিএনপি-জামায়াতকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পুনর্বহাল ছাড়া কোনো তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারেনি। তিনি বলেন, সরকারের কর্মসম্পাদন মূল্যায়ন করলে দশের মধ্যে সর্বোচ্চ চার বা পাঁচ নম্বরই দেওয়া যেতে পারে।

শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এই আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ, যা জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ে গঠিত। গত বছর জানুয়ারিতে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলার স্মরণেও এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের একজন নেতৃবৃন্দ হিসেবে নুর বলেন, ‘‘সরকারের গত বছরের কার্যক্রম বিবেচনা করে বলতে পারি, তারা দেশের পরিস্থিতিতে মৌলিক কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি, যার ফলে তাদের সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ নম্বর দেওয়া যায়, এমনকি এই নম্বর দিতে আমার সত্যিই কষ্ট হয়।’’

তিনি আরও জানান, ‘‘আমরা বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য লড়াই করেছি। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টা পরিষদের কাছ থেকে জনমতের মতো প্রত্যাশা ছিল, যা পূরণ হয়নি। তারা শুধু রাজনীতিতে বিএনপি-জামায়াতকে পুনর্বহাল করেছে, কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।’’

নুর সমস্যার সূত্র হিসেবে দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা, ভূমি ও প্রশাসনিক অফিসসমূহে সেবা প্রক্রিয়ার অপরিবর্তিত অবস্থা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘‘যেসব রাজনৈতিক নেতার প্রভাব রয়েছে, সেই অফিসগুলো তাদের প্রভাবেই চলে। আমরা সেই ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই।’’

তারা প্রস্তাব দিয়েছেন একটি ভারসাম্যপূর্ণ সংসদ গঠনের মাধ্যমে, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর এককেন্দ্রিক ক্ষমতা সংকুচিত হবে এবং সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদের সংশোধনসহ সুস্পষ্ট পরিবর্তন আসবে বলে নুর দাবি করেন।

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজেও গাছাড়া ও অনিয়মের বিষয় উঠিয়ে বলেন, ‘‘কিছু মৌলিক সংস্কারের জন্য সবাইকে ঐকমত্যের মাধ্যমে একত্রিত হতে হবে।’’ তিনি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে উচ্চকক্ষে সকল দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পার্টি-প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন বাধ্যতামূলক করতে চান। নূর আশা প্রকাশ করেন, এসব পরিবর্তন পার্লামেন্টকে আরো বৈচিত্র্যময় ও গণমুখী করবে।

আলোচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।