গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর বলেছেন, গত এগারো মাসের অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপি-জামায়াতকে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে পুনর্বহালের বাইরে কোনো বাস্তব পরিবর্তন করতে পারেনি। তিনি বলেন, সরকারের কার্যক্রম মূল্যায়ন করলে দশের মধ্যে সর্বোচ্চ চার বা পাঁচ নম্বর দেওয়া যায়।
শনিবার (১৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাব অডিটোরিয়ামে ‘গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা ও দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ’ শীর্ষক আলোচনায় নুর এসব কথা বলেন। এই আলোচনা আয়োজনে ছিল গণতন্ত্র মঞ্চ, যেটি গঠন করেছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। মূলত গত বছর ১৯ জানুয়ারির পুলিশি হামলার স্মরণে এই আয়োজন করা হয়েছিল।
সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘এগারো মাসে সরকার কর্তৃক আনা পরিবর্তন খুবই সীমিত। তাদেরকে দশের মধ্যে চার বা পাঁচ নম্বর দেওয়া হলেও এটি দেয়া কঠিন। কারণ দেশের অবস্থা আগের থেকেও ভালো হয়নি।’
নুর আরও বলেন, ‘আমরা বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করেছি, তবে দুঃখজনকভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের কাছ থেকে আশা অনুযায়ী কোনো পরিবর্তন হয়নি। শুধু বিএনপি-জামায়াতকে প্রশাসনে পুনর্বহাল ছাড়া কার্যকর কোনো উন্নতি হয়নি।’
তিনি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা, ভূমি কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কোন পরিবর্তন না হওয়ায় উদ্বেগ জানান। বললেন, ‘সেসব প্রতিষ্ঠানে এখনো ক্ষমতাশালী রাজনৈতিক নেতাদের আধিপত্য বিরাজ করছে, যেটি আমরা বদলাতে চেয়েছিলাম।’
নুরুল হক নূর বলেন, ‘আমরা একটি ভারসাম্যপূর্ণ সংসদের দাবিতে রয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর এককেন্দ্রিক ক্ষমতা সংকুচিত করে সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধনের সময় এখনই এসেছে।’
তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে অসংগতি ও অনিয়মের বিষয়টিও তুলে ধরে বলেন, মৌলিক সংস্কারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এছাড়াও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদে উচ্চকক্ষের প্রতিনিধিত্বে পার্টি সুষমতা আনতে পাড়া পদ্ধতি প্রবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
আলোচনায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ অন্যান্য বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।