বৃষ্টি আর ঝরঝরে রোদ—যখনই আকাশ মেঘলা হয় বা রোদ ঝলমল করে, তখন ছাতার প্রয়োজন অনুভূত হয়। ঝমঝম বৃষ্টি কিংবা টিপটিপ বৃষ্টিতে ছাতা সত্যিই অপরিহার্য।
একসময় গ্রাম-গঞ্জে ফেরি করে ছাতা মেরামত করতেন কারিগররা। অস্থায়ী ছোট দোকানগুলোতে থাকত উপচে পড়া ভিড়, কারণ ছাতার মেরামতের চাহিদা ছিল অনেক। এই পেশায় অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু আজকের আধুনিক সভ্যতায় এই কারিগরদের খোঁজই মেলা ভার। প্রযুক্তি এবং নতুন প্রজন্মের রুচির পরিবর্তনের কারণে ছাতা মেরামতের পেশাটি বিলুপ্তির পথে চলে যাচ্ছে।
পঞ্চগড়ের জগদল বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, এনামুল নামে এক ছাতা মেরামতের কারিগর অস্থায়ীভাবে একটি দোকানের সামনে বসে ভাঙাচোরা ছাতা মেরামত করছেন। তার কাজের দক্ষতা বেশ ভালো, তাই দামও তুলনামূলক বেশি।
ছাতা মেরামতকারী দুলাল জানালেন, “আমার বয়স ৪০ বছর। ছোটবেলাতেই দেখতাম মোড়ে মোড়ে ছাতা মেরামতের দোকান। কিন্তু এখন আর এমন কারিগর চোখে পড়ে না। এছাড়া ছাতা মেরামতের খরচ অনেক সময় নতুন একটি ছাতা কেনার চেয়েও বেশি হয়।”
এনামুল আরও জানান, “বর্ষাকালে আমাদের কাজের পরিমাণ বাড়ত, আর এক মৌসুমের আয় দিয়েই সারা বছর চালাতাম। কিন্তু এখন মানুষের রুচি অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। যারা ছাতার কোন অংশ নষ্ট হলে আগে মেরামত করাত, আজ তারা তা পছন্দ করে না। অধিকাংশ মানুষ নতুন ছাতা কেনার দিকে ঝুকে। ছাতাকে দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পরিবর্তে তারা ছোটখাটো সমস্যা হলেও নতুন ছাতা কেনায় উত্সাহী।”
যেখানে এক সময় হাঁটা পথের মাঝে অনেক কারিগর দেখা যেত, সেখানে এখন চার-পাঁচটি বাজার ঘুরে মেলে মাত্র একজন বা দুজন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পেশা ক্রমশ বিলুপ্তির পথে প্রবেশ করেছে। ছাতা মেরামতের কারিগররা এখন অতীতের স্মৃতিতে মুহ্যমান হয়ে আসছে।