ঢাকা | বুধবার | ৬ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই সফর, ১৪৪৭ হিজরি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করলেন

আজ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজার ‘৩৬ জুলাই উদ্‌যাপন’ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করেছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও অন্যান্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ হচ্ছে ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা এই গণঅভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।

ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং চলমান রাজনৈতিক সংকট তুলে ধরা হয়েছে। এতে স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, দুর্ব্যবহার ও অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সমালোচনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার জন্য নিরন্তর সংগ্রাম এবং ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়েছে।

ঘোষণাপত্রের মূল বিষয়বস্তু হলো:
১. পাকিস্তানের স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা অর্জন।
২. বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘ সংগ্রাম ও ত্যাগের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের প্রত্যাশা।
৩. স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের সংবিধান প্রণয়ন ও তা প্রয়োগে আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতা।
৪. একদলীয় শাসনব্যবস্থা এবং মতপ্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার হরণ।
৫. ষাট-এস দশকের সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার মুক্তিমূলক সংগ্রাম ও ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তন।
৬. জনমত বিপর্যস্ত করে শেখ হাসিনার অতিষ্ঠ ক্ষমতা ও ফ্যাসিবাদ প্রবণতা।
৭. দেশের অর্থনীতি, পরিবেশ ও মানুষের জীবনযাত্রায় দুর্নীতি ও অব্যাহত ক্ষয়ক্ষতি।
৮. ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণআন্দোলনে সরকারের রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতন।
৯. জনগণের ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে অবৈধ সরকারের পতন ও নতুন অস্থায়ী সরকারের গঠন।
১০. আগামী দিনে সুশাসন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ধারাবাহিক সংগ্রামের প্রত্যয়।

‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি দিশানির্দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনে জনগণের অঙ্গীকার ও আশার প্রতিফলন।

এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে দেশের প্রত্যেক শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ এবং জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানানো হয়েছে, যা আগামী দিনে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।