রোহিঙ্গা ইস্যুতে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এক বছরে দেশ এমন একটি পর্যায়ে এসেছে যেখানে নির্বাচন আয়োজনের জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং দেশটি এখন স্থিতিশীল। তিনি জানিয়েছেন, তারা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সময় অন্তর্বর্তী সরকারের জায়গায় একটি নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ’ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি এই সম্মেলনে এসেছি আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে। এক বছর আগে আমরা ছাত্রদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্টমুক্ত দেশ গড়ার অভিযানে ছিলাম। এখন আমরা আমাদের রাজনৈতিক জীবনকে আরো সুন্দর ও স্থিতিশীল করতে প্রস্তুত।
তিনি আরও যোগ করেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে ঘোষণা দিয়েছি; এক বছর আগে আমরা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পরিবর্তনের পথে যা শুরু করেছিলাম, এখন দেশ তার জন্য প্রস্তুত। এর পাশাপাশি, এই সফরে সরকারী প্রতিনিধি, জাতিসংঘের সংস্থা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও কথা বলতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এর উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং সমাধানও সেখানে খুঁজে পাওয়া উচিত। সবাইকে উদ্যোগী হয়ে দ্রুত এই সংকট নিরসনে কাজ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া ও তাদের জন্য টেকসই সমাধান প্রতিষ্ঠার জন্য সক্রিয় নাগরিক উদ্যোগ অপরিহার্য।
তিনি বলেছিলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা কেবল বাংলাদেশের নয়, এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথ দায়িত্ব। সংকটের স্থায়ী সমাধান নিয়ে ভাবা ও বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসা দরকার। যতক্ষণ না পর্যন্ত রোহিঙ্গারা তাদের আবাসভূমিতে ফিরে যেতে পারেন, ততক্ষণ এই বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হবে।
এর আগে, সোমবার সকালে কক্সবাজার পৌঁছে প্রধান উপদেষ্টা এই সংলাপে যোগ দেন। এদিন সকাল ১১টায় শুরু হয় তিন দিনের বিশেষ অধিবেশন, যেখানে মিয়ানমার ও আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আলোচনা হয়। এছাড়াও, রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন ও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যৌথ প্রচেষ্টার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) থেকে এই তিন দিনের সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা।