ফেনীর পরশুরামে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আরও এক বাংলাদেশি নিহত
হয়েছেন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দুইজনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও একজন আহত হয়ে চিকিৎসা
নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে পরশুরাম উপজেলার বাঁশপদুয়া সীমান্ত এলাকায় এসব হতাহতের
ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. লিটন (৩২), পরশুরাম উপজেলার বাঁশপদুয়া গ্রামের গাছি মিয়ার ছেলে। লিটনকে
ভারতের অংশে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরবর্তীতে বেলুনিয়ে হাসপাতাল নিয়ে গেলে তিনি
মারা যান। তার লাশ বাংলাদেশে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান বিজিবির ফেনী
ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন।
একই সময়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় মিল্লাত হোসেন (২১)। তিনি পরশুরাম উপজেলার
বাঁশপদুয়া গ্রামের ইউছুফ মিয়ার ছেলে। আহত মো. আফছার (৩১) ওই এলাকার এয়ার আহম্মদের
ছেলে।
পড়ুন: ফেনীতে দাঁড়িয়ে থাকা পিকআপে বাসের ধাক্কা, নিহত ২
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে পরশুরাম
উপজেলার গুথুমা বিওপির আওতাধীন সীমান্ত পিলার ২১৬৪/৩এস অতিক্রম করে কাটাতারের কাছে
চলে যান মিল্লাত হোসেন, মো. লিটন ও মো. আফছার। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে বিএসএফের
সদস্যরা গুলি ছোড়েন। এ ঘটনায় মিল্লাত, লিটন ও আফসার গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় লোকজন
মিল্লাত ও আফসারকে উদ্ধার করে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে
উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়৷
হাসপাতালে নেওয়ার পথে মিল্লাত হোসেনের মৃত্যু হয়। আফসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
লিটনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিএসএফ ধরে নিয়ে যায়।
কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
কেন এবং কোন অবস্থার প্রেক্ষিতে তারা শূন্য লাইন অতিক্রম করেছে এত রাতে। পাশাপাশি
প্রতিবাদ লিপি পাঠানো হবে। কোনো অবস্তাতেই সীমান্তে গুলি চালানো কাম্য নয়। বিএসএফের
সঙ্গে পতাকা বৈঠক হবে ও প্রতিবাদ লিপি প্রেরণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিএসএফের গুলিতে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর
পেয়ে বিজিবির সদস্যরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহত ব্যক্তির লাশ
ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, গুতুমা বিওপি টহল দল
২১৬৪/১২এস পিলার নিকটে ঘটনা স্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন
যে উল্লেখিত বাংলাদেশিরা পিলার অতিক্রম করে ভারতের ভিতরে ঢুকে এবং বিএসএফ তাদের কে
গুলি করে।
বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, গত রাতে দুই দেশের চোরাকারবারিরা ওই
স্থানে মালামাল পাচার করার জন্যে একত্রিত হয়। বিএসএফ তাদের সতর্ক করলে তারা
বিএসএফকে আক্রমণ করতে আসলে তারা গুলি ছুড়ে। ওই স্থান থেকে বিপুল মালামাল জব্দ করে।
বিএসএফ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি অধিক তদন্ত করে প্রয়জনীয় ব্যবস্থা নেবে।