ঢাকা | বুধবার | ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে: সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন যে, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে এবং নির্বাচন পরিচালনায় কোনো ধরনের গাফিলতি বরদাস্ত করবে না।

শনিবার বিকেলে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের দেওয়া ব্রিফিংয়ে সিইসি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিভাগীয় প্রশাসন ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক চলছে। কোনো নির্বাচন কেন্দ্রে যদি অবাধ ও শান্তিপূর্ণ কারণে গণ্ডগোল সৃষ্টি হয়, তাহলে সে আসনের নির্বাচন বাতিল করে দেওয়া হবে। নির্বাচনী দুর্নীতি, অনিয়ম কিংবা ঘুষবাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। বিশেষ করে গত নির্বাচনে যেসব প্রিজাইডিং অফিসার সমস্যা তৈরি করেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, “নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা এখন কমে গেছে। তাই নির্বাচনে মানুষের আস্থা ফিরে নিয়ে আসাই আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ।”

এ কারণে এখনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। তবে নির্বাচনের দুই মাস আগে নির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশন স্বল্প সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করছে।

সকালে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার রংপুর অঞ্চলের সকল নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের সম্মিলিত তৎপরতায় সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভব। এটা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রধান লক্ষ্য।

চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হলে মানুষ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে। বর্তমানে অনেক মানুষ ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকছে। এই অবস্থা বদলানো জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভোটারের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কারণ অনেকেই মনে করে অন্য কেউ তার ভোটটি ব্যবহার করবে। সেই জন্যই আমরা সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই যাতে তারা সতর্কতা বৃদ্ধি করতে পারেন।”

সিইসি এআই প্রযুক্তির অপব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, এটি এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, পেশাদার সাংবাদিকরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবেন, কিন্তু অনলাইনে অসত্য তথ্য ছড়িয়ে যারা জড়িত তাদের নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। তিনি সবাইকে অনুরোধ জানান, ঘটনা যাচাই-বাছাই ছাড়াই কোনও ভিডিও বা তথ্য শেয়ার না করার জন্য।

গত নির্বাচনে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের আগামী নির্বাচনে দায়িত্ব দেওয়া হবে না বলেও তিনি জানিয়েছেন।

সিইসি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকবে এবং দেশের ১৮ কোটি মানুষের ভোটাধিকার রক্ষায় কাজ করবে। তিনি নাগরিকদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন, ভোট দেয়া শুধু একটি নাগরিক কর্তব্য নয়, এটি একটি ঈমানী দায়িত্বও বটে। সকলের উচিত নিজ দায়িত্ব বুঝে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া এবং নিজের মতামত প্রকাশ করা।