ঢাকা | মঙ্গলবার | ৯ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারীদের ভবিষ্যত শেখ হাসিনার মতোই হবে: ওবায়দুর রহমান শাহিন

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন বলেছেন, আগামীতে যারা ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারি আচরণ করবে, তাদের পরিণতিও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো কঠোর ও কঠিন হবে। তিনি এসব কথা বলেন শনিবার (৯ আগস্ট ২০২৫) প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসানে ‘জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা'” শীর্ষক আলোচনা সভা ও দিনাজপুরের শহীদ পরিবারের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায়।

শাহিন আরও বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক নেতারা ফাঁসির দাবিতে আন্দোলন-প্রদর্শনে জড়িয়ে রয়েছেন, আর সেই সময়ে সাংবাদিকরাও আন্দোলনের পেছনে থেমে থাকেননি। তিনি উল্লেখ করেন, ১৫ বছরেরও বেশি সময় বিএনপিসমর্থক কোন পত্রিকা কোন ক্রোড়পত্র পাননি, তবে এবারে সর্বস্তরের পত্রিকা ক্রোড়পত্র পাচ্ছে।

সাংবাদিকদের সুরক্ষায় রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শাহিন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব ড. সাদেকুল ইসলাম স্বপন, দপ্তর সম্পাদক আবু বকর, ঢাকার সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম’র বক্তব্যও হয়।

খুরশিদ আলম বলেন, গত ১৬ বছরে ৬৬ জন সাংবাদিক জীবন উৎসর্গ করেছেন, সর্বশেষ গাজীপুরে আসাদুজ্জামান শাহিনের মৃত্যু ঘটেছে। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষ নিয়ে থাকে ততক্ষণ ভালো, কিন্তু যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন, তখনই তাদের শত্রু মনে করা হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘সাংবাদিকরা কারো বন্ধু নয়।’

দলীয় নেতারা বলেন, জুলাই বিপ্লব চূড়ান্ত নয়, ভবিষ্যতে আরো বিপ্লব হবে। সাংবাদিকদের দৃঢ় ঐক্য বজায় রাখা প্রয়োজন এবং ভারতের আধিপত্যবিরোধী শক্তিকে একযোগে প্রতিহত করতে হবে। তারা আরও বলেন, দিনাজপুরের দৃশ্যমান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারলে জেলার উন্নয়ন অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

অন্যান্য বক্তারা গত ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টি ও দুর্নীতির ঘটনাগুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের জনগণের সঙ্গে মিশে কাজ করতে হবে এবং বিভাজন সৃষ্টিকারীদের আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা সুরক্ষায় সাংবাদিকসহ সকলকে বিভাজন ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

সাংবাদিক পেশার গুরুত্ব তুলে ধরে বক্তারা বলেন, নিরস্ত্র মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারিয়েছেন সাংবাদিকরা। ঘাতকদের বিচার না হওয়ায় তাঁরা এখনও প্রাণের বিনিময়ে সত্য প্রকাশের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। স্বৈরাচার যতদিন থাকবে, সাংবাদিকতা ততদিন সক্রিয় থাকবে বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।

এ সময় তারা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেগম জিয়াকে জেলে রেখে মানসিক নির্যাতন চালানো ও ফ্যাসিস্ট শাসকের পতনের পেছনে সাংবাদিকদের অবদান তুলে ধরেন। সকল রাজনৈতিক দলকে সাংবাদিকদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে ও সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

বক্তারা স্মরণ করেন যে ছাত্রসমাজের বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধি ও পেশাজীবীরা মোবাইল আসক্ত থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে এবং জুলাই বিপ্লব সফল করতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে।

দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোфাজ্জল হোসেন দুলালসহ অন্যান্য শ্রেষ্ঠ অতিথিরা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। আলোচনা শেষে শহীদ রবিউল ইসলাম রাহুলের পিতা মুসলেম উদ্দিনকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য অতিথিরাও সম্মাননা স্মারক লাভ করেন।