বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত জুন ২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকা ও বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করেছে। এই অভিযানে মোট মূল্যমান ১৩৬ কোটি ৯ লক্ষ ৬২ হাজার টাকার বিভিন্ন প্রকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।
জব্দকৃত দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৪ কেজি ৩৩৮ গ্রাম স্বর্ণ, ১৩,৩৭২টি শাড়ি, ৩,৫০০টি থ্রিপিস, শার্টপিস, চাদর ও কম্বল, ৫৪৮টি তৈরী পোশাক, ২,১৪৭ মিটার থান কাপড়, ২,২৫,০৯৬টি কসমেটিকস সামগ্রী, ৪,৫৭৮টি ইমিটেশন সামগ্রী ও ৬,৬৪,৫০৮টি আতশবাজি। এছাড়া ৬,৩৪৫ ঘনফুট কাঠ, ৪,৯০৩ কেজি চা পাতা, ৩১,৯৭৪ কেজি সুপারি, ১৭,৭৬৯ কেজি সার, ১০,৫৪০ কেজি কয়লা এবং ১৯,২০৪ কেজি সুতা/কারেন্ট জালও জব্দ করা হয়েছে।
অতীতে মোবাইল ও সংশ্লিষ্ট সামগ্রী হিসেবে ১,৩২৮টি মোবাইল, ১,৮৫০টি মোবাইল কভার, ৩৭,৫৪১টি মোবাইল ডিসপ্লে, ১৫,৫১৯টি চশমা উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও ২,১৮২ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল-মূল, ৫,৮৪৪ কেজি ভোজ্য তেল, ১,০০০ লিটার ডিজেল, ৩,১৮২ কেজি জিরা, ১,৩৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৭,৪৯২ পিস চিংড়ি মাছের পোনা এবং আরও বিশাল পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।
পরিচালিত অভিযানের সময় মোট ৭৭৭টি গরু ও মহিষ, ১টি কষ্টিপাথরের মূর্তি, বিভিন্ন ধরনের যানবাহন সহ মোট ১৩৮টি নৌকা, ২৭টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৬৪টি মোটরসাইকেল ও ৩৯টি বাইসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।
অস্ত্র কবজের ক্ষেত্রেও বিজিবি ফলপ্রসূ অভিযান চালিয়ে ২টি দেশীয় পিস্তল, ১টি বিদেশী পিস্তল, ২টি দেশীয় একনল বন্দুক, ৩টি শটগান, ৩টি মর্টার শেল, ১৯টি গুলি এবং ৪টি হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করেছে।
মাদকদ্রব্য উদ্ধারেও একাধিক উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। জুন মাসে বিজিবি ১২,৬৮,০১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৭ কেজি ৯২৫ গ্রাম হেরোইন, ১ কেজি ৪৩০ গ্রাম কোকেন, ৮,২৭২ বোতল ফেনসিডিলসহ বিপুল পরিমাণ মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্য জব্দ করেছে। এছাড়া, বিদেশী মদ ১০,৯৪০ বোতল, বাংলা মদ ৩৯৩.৫ লিটার, ক্যান বিয়ার ১,৪৩৫ বোতল, ১,৬৯৮ কেজি গাঁজা, ১,২৪,৫৮৭ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ২,৬৪৯ কেজি তামাক পাতা, ৫৩,৯৩৫টি মাদকজাতীয় ট্যাবলেট ও ইনজেকশন, ৪,৭৭০ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ১৭ বোতল এলএসডি, ১২,৩৭৬টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ৯৬১,০৩৩টি বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।
সীমান্তে মাদক পাচার ও চোরাচালানের অভিযোগে ১৯৭ জন চোরাচালানী, ১৫৫ জন বাংলাদেশী নাগরিক এবং ৭ জন ভারতীয় নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেও ৩৩৫ জন মায়ানমার নাগরিককে নিরাপদে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিজিবি’র এই অভিযানে দেশের সীমানা নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ তাদের নিরলস পরিশ্রম ও জনসাধারণের কল্যাণে অব্যাহতভাবে সীমান্ত জুড়ে অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কাজ করে যাবে।