ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ২৪শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হুমায়রা ও তানভীরের দাফন সম্পন্ন

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজে ঘটে যাওয়া বিমানের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো দুই শিক্ষার্থী মেহেনাজ আক্তার হুমায়রা ও তানভীর আহমেদের গ্রামের বাড়িতে চলছে গভীর শোক ও মাতম।

আজ মঙ্গলবার সকালেই টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর ও সখীপুর উপজেলার দুই ভাগাড়ে তাদের শেষ বিদায় জানানো হয়। মেহেনাজ আক্তার হুমায়রা সখীপুর উপজেলার হতেয়া কেরানীপাড়ার দেলোয়ার হোসেনের কন্যা এবং তানভীর আহমেদ মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শি ইউনিয়নের নগর ভাতগ্রাম গ্রামের রুবেল মিয়ার পুত্র।

স্থানীয়ভাবে নিহত হুমায়রার বাড়িতে শোকের আবহ চলছে। সকাল ৯টায় সখীপুর হতেয়া কেরানীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা সম্পন্ন করে পরে কেরানীপাড়া সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। হুমায়রার খালু নাসির সিকদার জানান, ঢাকা থেকে তার মরদেহ গত রাতেই সখীপুরে নিয়ে আসা হয়েছিল। জানাজায় সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল রনীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

হুমায়রার বাবা দেলোয়ার হোসেন মাইলস্টোন কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। তিনি বললেন, “আমার আদরের মেয়ে এবং আরেক শিক্ষার্থী এই বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেছে। আমি একপ্রকার নিঃস্ব হয়ে গেছি। পুরো দেশ স্তব্ধ হয়ে এই শোক ভাগাভাগি করছে। কেন এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর দিয়ে প্রশিক্ষণ বিমান উড়ছিল, তার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি।” কথাগুলো বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

অপরদিকে, মির্জাপুর উপজেলার নগর ভাতগ্রাম নয়াপাড়ায় তথা তানভীরের বাড়িতে ব্যগ্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সকাল ১০টায় মির্জাপুরের আন্দিপাড়া মাদ্রাসার মাঠে তার জানাজা সম্পন্ন হয়ে, পরে আন্দিপাড়া সামাজিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তানভীরের পরিবার মূলত ঢাকায় বসবাস করলেও ব্যবসায়ীদের পুত্র হওয়ায় মির্জাপুরেই তার বাড়ি। তিনি অষ্টম শ্রেণির ছাত্র এবং তার ছোট ভাই তাশফিক তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। দুজনেই মাইলস্টোন কলেজের ছাত্র। মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্লাস ক্যাপ্টেন হিসেবে শ্রেণির দায়িত্ব পালন করছিলেন তানভীর।

তানভীরের চাচাতো ভাই সজিব বলেন, “চাচা-চাচি তাদের সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্যই মাইলস্টোন কলেজে ভর্তি করিয়েছিলেন। সমস্ত স্বপ্ন একদিনে শেষ হয়ে গেল। তার লাশ গ্রামে ফিরে আসার সময় হৃদয়বিদারক দৃশ্য সৃষ্টি হয়।”

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম আরিফুল ইসলাম বলেন, “এই কঠিন ঘটনায় আমরা সবাই গভীরভাবে মর্মাহত। নিহতদের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।”

দুই পরিবার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুরো দেশ এই দু jovem প্রাণ হারানোর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করছে।