বিশ্বের উন্নয়ন ভাবনাকে পরিবর্তন করে কম প্রতিকূল, কম সম্পদ-কেন্দ্রিক এবং আরও
বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন
উপদেষ্টা উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের উন্নয়ন ভাবনাকে অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। এটি কম প্রতিকূল,
কম সম্পদ-কেন্দ্রিক এবং আরও বেশি প্রকৃতি-কেন্দ্রিক হতে হবে।’
বুধবার (২৩ জুলাই) ‘জলবায়ু পরিবর্তনে সম্প্রদায় ও বাস্তুতন্ত্রের সহনশীলতা
বৃদ্ধি’ প্রতিপাদ্যে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত মেঘনা নলেজ ফোরামে ঢাকা থেকে
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব বলেন তিনি।
এ সময় বৈশ্বিক অংশীজনদের প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান গ্রহণে এবং উন্নত দেশগুলোকে
যথাযথভাবে তাদের জলবায়ু দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: টেকসই বিনিয়োগে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা
বাংলাদেশের নদী ও জাতীয় পরিচয়ের গভীর সম্পর্ক তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে নদীর
দেশ বললে ভুল হবে না। নদী ও এর পরিবেশ আমাদের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
প্রতিবেশী দেশ—নেপাল, ভারত ও চীনের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত নদী ব্যবস্থাপনায় আরও
জোরালো আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপও করেন উপদেষ্টা।
বাংলাদেশের চারটি প্রধান নদী অববাহিকা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করা— ফলে
সহযোগিতামূলক পরিবেশ শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি বলেও মন্তব্য করেন
তিনি।
নদীর অধিকার নিয়ে রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমাদের নদীগুলোকে শুধু নিজেদের অস্তিত্ব
রক্ষার জন্য নয়, বরং তাদের নিজস্ব অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়েও রক্ষা করা উচিত। বিশ্বের
বিভিন্ন দেশের বিচারব্যবস্থা ইতোমধ্যে নদীর অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে শুরু করেছে এবং
আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতেও এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।’
এছাড়াও হাওরকে বাংলাদেশের একটি অনন্য প্রতিবেশব্যবস্থা হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
তবে হাওর ও মেঘনা অববাহিকা এখন পরিবেশ দূষণ, বালু উত্তোলন, অনিয়ন্ত্রিত উন্নয়ন ও
ঘনঘন আকস্মিক বন্যার হুমকির মুখে রয়েছে বলে উপদেষ্টা আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: তিস্তায় ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে: পরিবেশ উপদেষ্টা
তাছাড়া, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কার্যকর পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থা না থাকার বিষয়েও
উদ্বেগ প্রকাশ করেন উপদেষ্টা এবং এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার যুবসমাজকে তথ্যপ্রবাহ
ব্যবস্থার উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।