ঢাকা | বুধবার | ২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

ভারতের বাংলাদেশ ক্রিকেট সফর অনিশ্চিত: দিল্লি থেকে মেলেনি অনুমোদনের ‘সবুজ সংকেত’

আগামী ১৩ আগস্ট ভারতের ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা ছিল। এই সফরে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও, এখন সেই সূচি অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে দ্বিপক্ষীয় সিরিজের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু ভারত সরকার থেকে এখনও চূড়ান্ত অনুমোদন না পায় সফর নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

দিল্লির সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, মূলত রাজনৈতিক কারণেই ভারত সরকার সঙ্কোচ করছে। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমান কূটনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সফর কোনো ইতিবাচক সংকেত প্রদান করবে না বলে মনে করছে তারা, তাই অনুমোদনের ব্যাপারে অনীহা দেখা দিয়েছে।

১৭ আগস্ট থেকে মিরপুরে সিরিজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখন সেই তারিখ পেয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। আসন্ন ম্যাচগুলোর সমাপনী হবে ৩১ আগস্ট এবং এক দিন পর ভারত দলে বাংলাদেশ ত্যাগ করবে। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা বিশেষত ভারত- পাক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের এক সাবেক সামরিক কর্মকর্তার বিতর্কিত মন্তব্য সফর অনিশ্চয়তায় প্রভাব ফেলে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্রুত ওই মন্তব্যের সঙ্গে সরকারকে আলাদা করে স্পষ্টতা প্রদান করেছিল, কিন্তু ভারতের প্রশাসনিক অস্বীকৃতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অন্যদিকে, বিসিসিআইও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন ছাড়া একক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না।

বিসিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘‘আমরা সিরিজটি নির্ধারিত সময়ে আয়োজনের চেষ্টা করব। তবে যদি আগস্টে ভারত সফরে না আসে, তাহলে ভবিষ্যতে সময়মতো সিরিজ আয়োজনের চেষ্টা করা হবে।’ তিনি আরও জানান, বিসিসিআইয়ের সঙ্গে আলোচনা চলমান এবং শুধু বাংলাদেশ নয়, অন্যান্য কয়েকটি সফরেও ভারতের সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

তবে সময়ের ঘেরা প্রকৃত বাস্তবতা হলো, সফর পিছিয়ে গেলেই ২০২৫ সালের মধ্যে আর সিরিজ আয়োজন করা কঠিন হবে কারণ সেপ্টেম্বর থেকে এশিয়া কাপ শুরু হচ্ছে, অক্টোবর-নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ডের সিরিজ রয়েছে, ডিসেম্বরে বিপিএল এবং ফেব্রুয়ারি-মার্চে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে।

ফলে, এই বছর ঘরের মাটিতে ভারতের সফর হয়ে উঠতে না পারাটা বাংলাদেশের জন্য এক বড় ধাক্কা। এখন অপেক্ষা থাকবে কূটনৈতিক টানাপোড়েনে বিসিসিআই সরকার থেকে অনুমোদন পেতে পারবে কিনা এবং নির্ধারিত সময়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে কি না।