নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের উপস্থিতি ও লাইভ সম্প্রচারের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে। নতুন এই নীতিমালা অনুযায়ী, ভোটকেন্দ্রে কোনও সাংবাদিক একসঙ্গে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না। পাশাপাশি, বুথের মধ্যে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি লাইভ সম্প্রচার সম্পূর্ণ বাধা দেওয়া হয়েছে।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষঙ্গিক হিসেবে গত সপ্তাহে প্রকাশিত ‘নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিক বা গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য নীতিমালা ২০২৫’ অনুযায়ী, ইসির বৈধ পরিচয়পত্র থাকলে সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে কেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রত্যেক সাংবাদিককে প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করে সংবাদ সংগ্রহ, ছবি বা ভিডিও ধারণ করতে হবে।
নীতিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, গোপন বুথে ছবি বা ভিডিও ধারণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একই বুথে এক সময় দুইটির বেশি সাংবাদিকের প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করা যাবে না। ভোটার, এজেন্ট বা কর্মকর্তা কারো সঙ্গে বুথের ভিতরে সাক্ষাৎকার নেওয়া যাবে না।
লাইভ সম্প্রচারের ক্ষেত্রে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বুথের বাইরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে লাইভ সম্প্রচার করা যাবে, তবে তা যেন ভোট গ্রহণের কাজ ব্যাহত না করে। এছাড়াও ভোট গণনার ঘরে সাংবাদিকরা প্রবেশ করে পর্যবেক্ষণ ও ছবি তুলতে পারবেন, কিন্তু লাইভ সম্প্রচার করা যাবে না।
নির্দেশনাতে আরও যোগ করা হয়েছে যে, বুথে কোনো নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা সরানো যাবে না, কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর পক্ষে কিংবা বিপক্ষে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ, এবং প্রিজাইডিং অফিসারের আইনগত নির্দেশনা মেনে চলা বাধ্যতামূলক। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটানোর কোনো প্রয়াস গ্রহণযোগ্য নয়।
যদি কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করে, তাদের গণমাধ্যম পাস বাতিল হতে পারে এবং নির্বাচনী আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে নির্বাচন কমিশন।
২০২৩ সালের নীতিমালার মতো এবারও ‘আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও ‘স্থানীয় সংবাদ সংস্থার নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এই নীতিমালা জাতীয় এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
নীতি প্রয়োগের মূল উদ্দেশ্য হলো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের কার্যক্রম সুসংগঠিত করা। নির্বাচন কমিশন আশা করছে, নতুন এই নির্দেশনাগুলো অনুসরণের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও নিরাপদ হবে।