ঢাকা | রবিবার | ১৭ই আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

মাঠ–পার্ক দখল নিয়ে উদ্বেগ, আইন সংশোধনের দাবি

উচ্চ আদালতের একাধিক নির্দেশনা সত্ত্বেও রাজধানীর মাঠ–পার্কগুলো দখলমুক্ত হচ্ছে না।

নানা ক্লাব ও প্রভাবশালী মহল এখনও এসব সরকারি সম্পত্তি দখল করে রেখেছে। এ ব্যাপারে

সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেছেন

পরিবেশবাদী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে ‘মাঠ, পার্ক, জলাধার

দখলমুক্ত আন্দোলন’ ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। বক্তারা বলেন,

মাঠ ও পার্ক রক্ষায় বিদ্যমান আইন সংশোধন ছাড়া স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশবাদী ব্যক্তিত্ব ও পল্লীমা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুর

রহমান ময়না। সঞ্চালনা করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন–পবা’র সাধারণ সম্পাদক মেসবাহ

উদ্দিন আহমেদ সুমন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সম্পাদক ব্যারিস্টার নিশাত

মাহমুদ। আলোচনায় অংশ নেন জনস্বাস্থ্য ও নীতি বিশ্লেষক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম

তাহিন, বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব, ‘সেভ ধানমন্ডি

প্লেগ্রাউন্ডস’-এর সংগঠক সৈয়দ ইসতিয়াক আহমেদ, ‘তেঁতুলতলা মাঠ বাঁচাও আন্দোলন’-এর

সমন্বয়ক সৈয়দা রতনা ও সংবিধান সংস্কার কমিশনের সদস্য ফিরোজ আহমেদ।

বক্তারা অভিযোগ করেন, ধানমন্ডি মাঠ একসময় সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু একটি

ক্লাব দখল করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করে মাঠকে নিজেদের সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত

করে রেখেছে। জনগণের অর্থে তৈরি মাঠ থেকে তারা শেয়ার বিক্রি করে কোটি টাকা আয় করেছে।

এ ছাড়া পরিবেশবাদীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে।

গুলশানের শহীদ তাজউদ্দিন স্মৃতি পার্ক দখল নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বক্তারা। ৮ একর

জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এ পার্ক গুলশান ইয়ুথ ক্লাব দখল করে ফুটবল টার্ফ তৈরি করেছে।

ঘণ্টা প্রতি ভাড়া দিয়ে সেখান থেকে তারা আয় করছে। আদালতের একাধিক রায় থাকা সত্ত্বেও

রাজউক ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এ পার্ক ক্লাবকে ফেরত দিয়েছে বলে

অভিযোগ ওঠে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছরের অক্টোবরে রাজউক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ক্লাবের সঙ্গে

চুক্তি বাতিল করে পার্ক নিজেদের দখলে নেবে। কিন্তু চলতি বছরের জুলাইয়ে ডিএনসিসি

আবারও চুক্তি পুনর্বহাল করেছে। বক্তারা এ সিদ্ধান্তকে আদালতের নির্দেশনার প্রতি

অবমাননা বলে উল্লেখ করেন।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, মাঠ–পার্ক দখলদারদের তালিকা তৈরি করে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।

একই সঙ্গে যারা এ প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের

বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হবে। দখলদার ও জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে

দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দাখিলের পরিকল্পনার কথাও সভায় জানানো হয়।