ঢাকা | মঙ্গলবার | ২৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা সফর, ১৪৪৭ হিজরি

মেসির জাদু ছোঁয়ায় ফুটবলে অমরত্বের নতুন অধ্যায়

ফুটবল বিশ্বে এমন মুহূর্ত বিরল যখন এক খেলোয়াড়ের পারফরমেন্স দেখে মনে হয়, তিনি সময়ের নাগালে নেই, বরং একে একে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে চলেছেন। লিওনেল মেসি, যাকে ফুটবলপ্রেমীরা ভালোবেসে ‘মেসি’ কিংবা গোপনে ‘অমর’ বা ‘ইম্মর্টাল’ বলে ডাকে, ৩৭ বছর বয়সে আজও মাঠের মায়া কমেনি তার। তার পায়ে ফুটবলের জাদু বরাবরই আলাদা একটা ছায়া ফেলে, যা সহজে মুছে ফেলা অসম্ভব।

গতকাল রাতে আটলান্টায় ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচে এ জাদুর এক উজ্জ্বল উদাহরণ আমরা দেখলাম। পোর্তোর বিপক্ষে ১-১ গোলে সমতায় থাকা মায়ামি যখন ফ্রি-কিক পায়, তখন বল ছিল বক্সের সামনে ছোট্ট ‘ডি’-র ব্যাসার্ধের মধ্যে ঠিক জায়গায় রাখা। মেসি, গোলাপি ও আকাশি-সাদা জার্সিধারী ৩৭ বছর বয়সি এই ফুটবল জাদুকর, কয়েক পা দূরে দাঁড়িয়ে হয়েছিল যেন সে একটি নতুন ইতিহাস রচনার প্রস্তুতি নিয়েছে। দর্শকরা তখনই বুঝতে পেরেছিলেন, যা ঘটবে তা হবে অসাধারণ কিছু।

মেসির বাঁ পায়ের কিক, বলের ধনুকের মতো বাঁকা ফিতে বক্সের শেষ প্রান্তে জালে বলটি আদরের ঘরে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সাফল্যের উচ্ছ্বাসে দুই হাত ছড়িয়ে শিশুর মতো ছুটে যেতে দেখা গেল তাকে, যা তার প্রতিটা গোলকে একটি জীবন্ত উৎসব বানিয়ে তোলে। এই মুহূর্তটিই ফুটবলের জাদুকর মেসিকে একটি শাশ্বত অস্তিত্ব দিল।

যদিও ক্যারিয়ারে তার এত অর্জন যে আর কিছু বাকি নেই, মেসির তরতাজা ও তরুণ প্রাণের নেশা তাকে বলের সাথে এক জীবন্ত বৃত্তান্তে আবদ্ধ করে রেখেছে। দলকে জয় এনে দিতে ও নিজের প্রতি মানুষের ভালোবাসা ধরে রাখতে তার নিষ্ঠা আজও অব্যাহত। মেসির এ নেশা সাধারণ ও অসাধারণ মানুষের মাঝে পার্থক্য গড়ে দেয়। তার অনবদ্য গোলগুলো শুধু মায়ামির জন্য নয়, গোটা ফুটবলবিশ্বের জন্য আনন্দের উৎস।

বিশেষ করে পর্তুগালের ঐতিহ্যবাহী ও এক সময়ের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়ন ক্লাব পোর্তোর বিরুদ্ধে এই জয় মায়ামির জন্য বিশেষ গৌরবের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্লাব বিশ্বকাপে ইউরোপীয়ান ক্লাবকে পরাজিত করায় কনক্যাকাফ অঞ্চলের ইতিহাসে এটি একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ফুটবলের মাঠে এই ঐতিহাসিক সাফল্যের নায়ক মেসিই।

মেসির ফ্রি-কিক গোলের মাধ্যমে ফিফার টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে ব্রাজিলের কিংবদন্তি মার্তার রেকর্ড ভেঙে দেওয়া হলো, গোল সংখ্যা এখন ২৫। মেসির এই অসাধারণ কীর্তিই তার অমরত্বের এক দাবী। ফুটবল প্রেমিদের মনে রাখা উচিত, মেসির প্রতিটি গোল শুধু একটি গোল নয়, বরং ফুটবলের ক্যানভাসে এক ইতিহাসের নবজাগরণ।