ঢাকা | শনিবার | ১৯শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

যুক্তরাষ্ট্র হামলা বন্ধ রাখলে ইরানের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা চালানো সম্ভব

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের ওপর আর কোনো হামলা চালাতে না চায় তবে তারা পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কিত আলোচনায় বসার জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেন, ইরান সবসময়ই সংলাপের পথ অনুসরণ করেছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে, তবে আলোচনা যেন যুদ্ধের দিকে না গড়ায়, সে বিষয়ে স্পষ্ট নিশ্চয়তা প্রয়োজন।

শনিবার (১২ জুলাই) তেহরানে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আরাগচি বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ২২ জুনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর বড় ধরণের ক্ষতি করেছে যা আলোচনা ও বিরোধ সমাধানের পথকে জটিল করে তুলেছে। তিনি উল্লেখ করেন যে, এসব হামলা না হওয়ার নিশ্চয়তা পেলে পুনর্বার আলোচনা শুরু করা সম্ভব।

এই হামলার পর ইরান জাতিসংঘের পারমাণবিক তদারকি সংস্থা আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করেছে, যার ফলে সংস্থার পরিদর্শকরা ইরান ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। আরাগচি জানালেন, এ থেকে আগামীতে যেকোনো পরিদর্শন ইরানের নিরাপত্তাগত উদ্বেগ এবং পরিদর্শক নিরাপত্তাকে বিবেচনায় রেখে নির্ধারণ করা হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকায় অব্যবহৃত বিস্ফোরক ও বিকিরণযুক্ত উপাদান থাকার আশঙ্কা রয়েছে, যা এক ধরনের নিরাপত্তার হুমকি সৃষ্টি করে।

আরও তিনি বলেন, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কার্যক্রম নিজের ভূখণ্ডে অব্যাহত রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছেন, এই কর্মসূচি মেনে নেওয়া হবে না।

ইসরায়েল দাবি করছে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছেছিল বলে তারা হামলা চালিয়েছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইএইএ বলছে, ইরান ২০০৩ সালের পর থেকে কোনো পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি অব্যাহত রাখেনি। তবে ইরান ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে, যা অস্ত্র তৈরি করতে প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।

গত সোমবার (৭ জুলাই) ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে তাদের ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন এখনো সম্ভব হয়নি।