ঢাকা | বুধবার | ২৩শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

রুহুল কবির রিজভীর দাবি: হাসিনার আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ডাকাতের আধিপত্যস্থল

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস নিয়ে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন আগে নৌকায় অনেক দূরে যেতাম, মাঝি বলত ওই গ্রাম ডাকাতদের গ্রাম। হাসিনার আমলে আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ডাকাতদের গ্রাম। তখন আমরা অনেক আতঙ্কের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পার হই।’’

মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রদলের আয়োজিত ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের স্মৃতিতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন এবং সংগীত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘‘এই মোমবাতি প্রজ্জ্বলন আমাদের গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রতীক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রের মূর্ত প্রতীক, অধিকার প্রতিষ্ঠার আদর্শ স্থল। সেখানে দাঁড়িয়ে আমি ৫২ ও ৬৯-এর আন্দোলনের স্মৃতি মনে করি, যেখানে শান্তির সুবাতাস বইত।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা বলেন, বাঁধা দিলে সব কিছু বন্ধ হয়ে যাবে, আমরা ছাত্রদের স্তব্ধ করে দেব। কিন্তু তবুও ছাত্ররা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিল, যেকোন বাধাকে তারা পেরিয়েছে। আমাদের ৩৬ দিনের কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন আজ আলোর প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে হয়েছে।’’

রিজভী অভিযোগ করেন, ‘‘শেখ হাসিনার পেটুয়া বাহিনীর সামনে ছাত্রদলের বহু নেতাকর্মী গুম ও হত্যা হয়েছে। নব্বই ও আশির দশকে তারা যে ঘৃণ্য ভূমিকা নিয়েছে তা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও দেখা গেছে। এই সংগ্রাম সফল করতে আরোও প্রতিবন্ধকতা আসবে, সেগুলো অতিক্রম করেই আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো।’’

কর্মসূচিতে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমি ছাত্রদলকে অভিনন্দন জানাই। জুলাই আন্দোলন একদিনের নয়, হাজার হাজার মানুষের প্রাণ দেয়ার ফল। ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান আসাদের রক্তের কান্নার সাথে জড়িত। নব্বইয়ের স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সফল হয়। আজ আমরা খুনি হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি। শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যাবে না।’’

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘‘বিএনপি ইনশাআল্লাহ ক্ষমতায় আসবে এবং তারেক রহমান দেশ পরিচালনা করবে। খুব শীঘ্রই তিনি দেশে ফিরে আসবেন।’’

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘‘জুলাই আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে শুরু হলেও পরবর্তীতে ছাত্রদল আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে রাস্তা দখল করেছে। ছাত্রদলের তৃণমূল নেতাকর্মীরাই সবচেয়ে বেশি হেনস্থা ও মামলা মোকাবেলা করেছে। আন্দোলনে এককভাবে শতাধিক নেতাকর্মী শহীদ হয়েছে। তাদের আত্মত্যাগ কখনো ভুলবেন না।’’

কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির যোগ করেন, ‘‘পনেরো বছর ধরে দেশের বিরুদ্ধে যে ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়েছিল, সে সময় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ বিভিন্ন দল ঐ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। তরুণদের মতামত বাধা দেওয়া হলেও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে তারা নেতৃত্ব দিয়েছে।’’

কর্মসূচিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকার বিভিন্ন থানার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।